কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন উত্তর 2024 | ke bachay ke bache Question Answer | মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় | উচ্চমাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2024

কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন উত্তর 2024, কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের প্রশ্ন উত্তর  ke bachay ke bache Question Answer | মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় | উচ্চমাধ্যমিক বাংলা সাজেশন 2024: 



উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Ke Bachay Ke Bache Question and Answer কে বাঁচায় কে বাঁচে! (গল্প) মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Ke Bachay Ke Bache Question and Answer

কে বাঁচায় কে বাঁচে! (গল্প) মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Ke Bachay Ke Bache Question and Answer : কে বাঁচায় কে বাঁচে! (গল্প) মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Ke Bachay Ke Bache Question and Answer নিচে দেওয়া হলো। এই দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – WBCHSE Class 12 Bengali Ke Bachay Ke Bache Question and Answer, Suggestion, Notes – কে বাঁচায় কে বাঁচে! (গল্প) মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে বহুবিকল্পভিত্তিক, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রোচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (MCQ, Very Short, Short, Descriptive Question and Answer) গুলি আগামী West Bengal Class 12th Twelve XII Bengali Examination – পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট। তোমরা যারা কে বাঁচায় কে বাঁচে! (গল্প) মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Ke Bachay Ke Bache Question and Answer খুঁজে চলেছ, তারা নিচে দেওয়া প্রশ্ন ও উত্তর গুলো ভালো করে পড়তে পারো। কে বাঁচায় কে বাঁচে! (গল্প) মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় – উচ্চমাধ্যমিক দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal HS Class 12th Bengali Ke Bachay Ke Bache Question and Answer

MCQ | কে বাঁচায় কে বাঁচে! (গল্প) মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Ke Bachay Ke Bache Question and Answer 



MCQ | কে বাঁচায় কে বাঁচে


আজ চোখে পড়লো প্রথম -  আজ প্রথম মৃত্যুঞ্জয়ের চোখে কি পড়লো ?

অনাহারের ফলে মৃত একজন মানুষ।


"খানিক পরেই আসছে"-  কে আসছে ?

মৃত্যুঞ্জয়।


বলতে থাকে শরীরের কষ্ট বোধ -  মৃত্যুঞ্জয়ের কষ্ট বোধ হওয়ার কারণ কি ? 

মৃত্যুঞ্জয়ের মনে আঘাত লাগলে তার শরীরে কষ্টবোধ শুরু হয়।


নিখিলকে প্রতিমাসে কিছু কিছু টাকা পাঠাতে হয়" -  কতো জায়গায় টাকা পাঠাতে হয় ?

তিন জায়গায়।


বাড়িটাও তার শহরের ... "  - মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির শহরের কেমন জায়গায় ?

 নিরিবিলি অঞ্চলে।


অন্য সকলের মত মৃত্যুঞ্জয়কেও সে খুব পছন্দ করে"। -  মৃত্যুঞ্জয় কে নিখিলের পছন্দের কারণ কি ?

মৃত্যুঞ্জয় আদর্শবাদের কল্পনা তাপস বলে।


মৃত্যুঞ্জয়ের ধুলিমলিন জামা শেষ পর্যন্ত কি হয়েছিল ?

ছিড়ে গেছে।


একটা কাজ করে দিতে হবে ভাই"-  কাজটি কি ?

মাইনের টাকা টা রিলিফ ফান্ডে দিয়ে আসা।


সংসারে তার নাকি মন নেই" - এখানে কার কথা বলা হয়েছে ?

নিখিলের কথা বলা হয়েছে।


দশ জনকে খুব করার চেয়ে নিজেকে না খাইয়ে মারা বড়ো পাপ।" -  

রাজধর্মের বিচারে।


মৃত্যুঞ্জয়ের রকম দেখে নিখিল অনুমান করতে পারলো" -  নিখিল কি অনুমান করেছিল ?

বড় কোন সমস্যার সঙ্গে তার সংঘর্ষ হয়েছে।


টুনুর মাকে মিথ্যা কথা বলে"-  কোন মিথ্যা কথা ?

মৃত্যুঞ্জয়ের আসার কথা।


মৃদু ঈর্ষার সঙ্গে সে তখন ভাবে যে নিখিল না হয়ে মৃত্যুঞ্জয় হলে মন্দ ছিল না।" - নিখিল এরকম কখন ভাবে ?

মৃত্যুঞ্জয়ের কাছে নিখিল কাবু হয়ে পড়লে।


নিখিলকে বার বার আসতে হয়।"-  নিখিল কোথায় আসে ?

মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ি।


আনমনে অর্ধ ভাষণে যেন আর্তনাদ করে উঠল মৃত্যুঞ্জয়"-  তার আর্তনাদের কারন কি?

সে অনাহারে মৃত মানুষটিকে দেখে দুঃখ পেয়েছে।


নিখিল অর্থসাহায্য কত টাকা করে কমানোর কথা ভেবে ছিলো?

পাঁচ টাকা।


মৃত্যুঞ্জয়ের ভিতরটা সে পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছে"-  নিখিলের কখন একথা মনে হল !?

   মৃত্যুঞ্জয় কে এসে কয়েকটি প্রশ্ন করে যখন উত্তর পেল না।


মৃত্যুঞ্জয়ের স্ত্রীর কেবলই মনে পড়ে।" কি মনে পড়ে ?

ফুটপাতের লোক গুলোর কথা।


টুণুর মা তাকে সকাতরে অনুরোধ জানায়"-  কোন অনুরোধ ?

নিখিল যেনো মৃত্যুঞ্জয়ের প্রতি নজর রাখে।


সেটা আশ্চর্য নয়"-  এখানে কোন বিষয়টিকে নিখিলের আশ্চর্য বলে মনে হয়নি ?

অনাহারে মৃত মানুষকে পথের পাশে পড়ে থাকতে দেখা।


মৃত্যুঞ্জয়ের স্ত্রীর কোন কথা কেবলই মনে পড়ে ?

ফুট পাতের লোক গুলোর কথা ।


মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়িতে কতো জন লোক থাকে ?

নয় জন লোক।


মৃত্যুঞ্জয় নিকেলের থেকে কত টাকা বেশি মাইনে পায় ?

৫০ টাকা।


মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির অবস্থা কেমন ?

শোচনীয়।


এ অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত কি ?"- বক্তা এখানে কাকে অপরাধ বলে মনে করেছে ?

নিজের চারবেলা করে ভাত খাওয়া কে।


মৃত্যুঞ্জয় একতারা নোট নিখিলের সামনে রাখলো" -  কি কারণে ?

টাকাটা রিলিফ ফান্ডে দেবার জন্যে।


মৃত্যুঞ্জয় স্মরসীতে আটকানো মৌমাছির মত কি করছিল ?

মাথা খুঁড়ছে।


মৃত্যুঞ্জয় অফিসে যায় কিসে ?

ট্রামে।


নিখিল রোগা, তীক্ষ্ণবুদ্ধি এবং একটু কি প্রকৃতির ?

আলসে প্রকৃতির লোক।


গা থেকে এইছি। খেতে পাইনে বাবা"- বক্তা কে ?

মৃত্যুঞ্জয়।


ফুটপাতে হঠাৎ তার বেশি প্রয়োজন হয় না "- কার প্রয়োজন হয় না ?

মৃত্যুঞ্জয়ের।


মৃত্যুঞ্জয় নিখিলকে রিলিফ ফান্ডে দিতে বলেছিল"-  কি ?

মাস মাইনের পুরো টাকা টা।


কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পটি কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল ?

ভৈরব পত্রিকায়।


কয়েক মিনিটে মৃত্যুঞ্জয়ের সুস্থ শরীরটা অসুস্থ হয়ে গেল "-  কারণ কি?

প্রথমবার অনাহারে মৃত্যু দেখে সে প্রবল আঘাত পেয়েছিল।


নিখিল অবসর জীবন কিভাবে কাটাতে চাই? 

বই পড়ে আর একটা চিন্তার জগৎ গড়ে তুলে।


গ্রুয়েল কথার অর্থ কি ?

ভাতের ফ্যান।


মৃত্যুঞ্জয় প্রথম কখন অনাহারে মৃত্যু দেখেছিল ?

অফিস যাওয়ার পথে।


মৃত্যুঞ্জয় ও নিখিলের দাম্পত্য জীবন কত বছরের ছিল ?

ছয় বছর ও আট বছরের।


বাড়ি থেকে কতটা হেঁটে মৃত্যুঞ্জয় ট্রামে চড়তো ?

দু - পা ।


একটু বসেই তাই উঠে গেল কল ঘরে"-  মৃত্যুঞ্জয় কল ঘরে গিয়েছিল কেন ?

বমি করার জন্য।


পাশের কুঠুরি থেকে নিখিল যখন খবর নিতে এলো তখন মৃত্যুঞ্জয় কি করছিল ?

জল খাচ্ছিল।


মৃত্যুঞ্জয় নিখিলের থেকে 50 টাকা বেশি বেতন পেত কেন ?

অফিসের একটা বাড়তি দায়িত্ব পালন করার জন্য।


অন্য সকলের মত মৃত্যুঞ্জয়কেও সে খুব পছন্দ করে" - কে ?

নিখিল।


আনমনে অর্ধ ভাষণে যেন আর্তনাদ করে উঠল মৃত্যুঞ্জয়"-  কি বলে আর্তনাদ করে ওঠে ?

না খেয়ে মরে গেল।


মৃত্যুঞ্জয় সংসারের বাজার ও কেনাকাটা কে করে ?

চাকর ও ছোট ভাই।


মনে আঘাত পেলে মৃত্যুঞ্জয়ের কি হয় ? 

শরীরে তার প্রতিক্রিয়া হয়।


অফিসে যাবার পথে মৃত্যুঞ্জয় প্রথম কি দেখলো ?

অনাহারে মৃত্যু।

কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের প্রশ্ন উত্তর


কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের SAQ

  মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পে যে সকল গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলি (SAQ) পরীক্ষায় খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং উপযুক্ত সেই সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির প্রশ্ন ও উত্তর নিচে পরপর আলোচনা করা হলো।  এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে প্রশ্নগুলি ১ মার্কের করে উত্তর দিতে হয় এই কারণে উপযুক্ত এবং সংক্ষিপ্ত উত্তর দানই গুরুত্বপূর্ণ।


মৃত্যুঞ্জয় প্রথম কখন অনাহারে মৃত্যু দেখেছিল ?

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত কে বাঁচায় কে বাঁচে ছোটগল্পে একদিন বাড়ি থেকে অফিস যাওয়ার পথে মৃত্যুঞ্জয় প্রথম অনাহারে মৃত্যু দেখেছিল।


ফুটপাতে মৃত্যুঞ্জয়ের বেশি হাটা প্রয়োজন হয় না কেন?

  মৃত্যুঞ্জয়ের এলাকায় ফুটপাত কম অন্যদিকে বাড়ি থেকে বেরিয়েই সে অফিসের ট্রাম ধরে আবার তাকে বাজার দোকানেও করতে হয় না তাই মৃত্যুঞ্জয়ের ফুটপাতে হাঁটার বেশি প্রয়োজন হয় না।


নইলে দর্শনটা অনেক আগেই ঘটে যেত"-  কিসের দর্শনের কথা বলা হয়েছে?

  এখানে ফুটপাতে মৃত্যুঞ্জয়ের দুর্ভিক্ষের পটভূমিতে অনাহারের মৃত্যুর দর্শনের কথা বলা হয়েছে।


কোথায় তীক্ষ্ণ ধার হা হুতাশ করা মন্তব্য করা হয়েছে ? 

  অফিসে নিখিল যে সংবাদপত্রটি অন্যমনস্কভাবে তুলে নিয়েছিল তারই এক জায়গায় তীক্ষ্ণধার হাহহু চাষ করা মন্তব্য করা হয়েছে।


মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির বাজার ও কেনাকাটা কারা করতো?

  কে বাঁচায় কে বাঁচে ছোটগল্পে মৃত্যুঞ্জয়ের ছোট ভাই ও বাড়ির চাকর তাদের বাড়ির বাজার ও কেনাকাটা করত।


নিজের চোখে মৃত্যু দৃশ্য দেখার আগে মৃত্যুঞ্জয় কিভাবে সেই ব্যাপারে জেনেছিল? 

নিজের চোখে অনাহারে মৃত্যু দেখার আগে পর্যন্ত মৃত্যুঞ্জয় শুধু খবরের কাগজ পড়ে আর লোকের মুখে শুনেই অনাহারে মৃত্যুর কথা শুনেছিল।


আমায় কিছু একটা করতে হবে ভাই"-  কি কারণে বক্তা কিছু করার তাগিদ অনুভব করেছেন ?

অনাহারে মৃত্যু দেখার পর দুঃখে এবং আত্মজ্ঞানী তে জর্জরিত হয়ে পড়ে মৃত্যুঞ্জয় অনাহারি মানুষদের জন্য কিছু করার তাগিদ তখনই সে অনুভব করে।


মৃত্যুঞ্জয় দের বাড়ি কেমন জায়গায় ছিল?

  মৃত্যুঞ্জয় দের বাড়ি ছিল শহরের একটি নিরিবিলিপাড়ায় যেখানে ফুটপাত বেশি ছিল না এবং লোকও বেশি মরতে দেখা যেত না।


মৃত্যুঞ্জয় বাড়ি থেকে কিভাবে অফিসে যেত? 

মৃত্যুঞ্জয় বাড়ি থেকে বেরিয়ে দু পা হেঁটে রাস্তায় গিয়ে ট্রামে উঠতো এবং ট্রাম্প থেকে অফিসের দোরগোড়ায় পৌঁছাতো।


এক বেলা খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি।"-  বক্তার এ কাজের উদ্দেশ্য কি ?

অনাহার গ্রস্ত লোকেদের খাবার বিলিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে বক্তা মৃত্যুঞ্জয় এবং তার স্ত্রী এক বেলা করে খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিল।


মনে আঘাত পেলে মৃত্যুঞ্জয়ের শরীরে কি হয়?

মনে আঘাত পেলে মৃত্যুঞ্জয়ের শরীরে তার প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় মন কষ্টের সঙ্গে সে শারীরিক কষ্ট অনুভব করে।


এ অন্যায় নয়? অত্যাচার নয়,"-  বক্তা কাকে অন্যায় এবং অত্যাচার বলেছেন ?

মৃত্যুঞ্জয় না খেলে তার স্ত্রী অন্য গ্রহণ করে না এই ঘটনাকে মৃত্যুঞ্জয় নিজেই অন্যায় এবং অত্যাচার বলেছেন।


অনাহারে মৃত্যু দেখার দিন অফিসে পৌঁছে মৃত্যুঞ্জয় কি করেছিল?

অনাহারে মৃত্যু দেখার দিন শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত মৃত্যুঞ্জয় অফিসে পৌঁছে বাড়ি থেকে খেয়ে আসা সমস্ত খাবার বমি করে তুলে দিয়েছিল।


মৃত্যুঞ্জয় নিখিলকে কোন কোন বিশেষনে তিরস্কার করেছিল ?

মৃত্যুঞ্জয় নিখিল কে পাশবিক স্বার্থপর এবং বদ্ধ পাগল বলে তিরস্কার করেছিল।


জীবনধারণের জন্য অন্যে মানুষের দাবি যে জন্মচ্ছে না নিখিল তার মূল কারণ বলে কি মনে করেন ?

ভিক্ষা দেওয়ার মতো অস্বাভাবিক পাপ আজও অন্য বলে পরিগণিত হয় আর জীবন ধরনের অন্যের মানুষের দাবি জন্মেছে না বলে নিখিল মনে করে।


নিখিল অবসর জীবনটা কিভাবে কাটাতে চাই ? 

নিখিল অবসর সময় টা বই পড়ে এবং নিজস্ব একটি চিন্তার জগৎ গড়ে তুলে কাটাতে চাই।


মন্তব্য শুনে মৃত্যুঞ্জয় ঝাজিয়ে উঠলো"-  কোন মন্তব্য ?

নিখিল যখন মৃত্যুঞ্জয় কে জানিয়েছিল যে টুনুরমার যা স্বাস্থ্য তাতে এক বেলা করে খেলে সে পনেরো-কুড়ি দিন টিকবে, এই কথা শুনে মৃত্যুঞ্জয় ঝাজিয়ে উঠেছিল।


এভাবে দেশের লোককে বাঁচানো যায় না"-  কিভাবে?

মৃত্যুঞ্জয় যে তার স্ত্রীকে সাথে করে একবেলা খাবার না খেয়ে সেই খাবার অনাহারীদের মাঝে বিলিয়ে দেয় এই কাজ করে দেশের লোককে বাঁচানো যাবে না বলে নিখিলের মনে হয়েছে।


নিখিলের সমপদস্থ মৃত্যুঞ্জয় নিখিলের থেকে কত টাকা বেশি মাইনে পায় এবং কেন ?

  অফিসের একটি বাড়তি কাজের জন্য নিখিলের সমাপদস্থ হয়েও মৃত্যুঞ্জয় তার থেকে ৫০ টাকা বেশি মাইনে পায়।


ভুরি ভোজটা অন্যায় কিন্তু না খেয়ে মরাটা উচিত নয় ভাই"- উক্তিটি কার ?

  কে বাঁচায় কে বাঁচে ছোট গল্পের আলোচ্য উক্তিটির বক্তা মৃত্যুঞ্জয়ের বন্ধু নিখিল।


একটা কাজ করে দিতে হবে ভাই।"-  কাজটি কি ?

মৃত্যুঞ্জয় অফিসের মাইনের দিন নিখিলের হাতে একতারা নোট দিয়ে সেগুলি রিলিফ ফান্ডে জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিল এখানে সেই কাজের কথাই বলা হয়েছে।


নিখিলের চেহারা এবং প্রকৃতি কেমন ছিল? 

নিখিল একটু রোগ া প্রকার বুদ্ধিসম্পন্ন এবং একটু অলস প্রকৃতির লোক ছিল।


সংসারে তার নাকি মন নেই - তার কিসে মন ছিল ?

নিখিল মৃত্যুঞ্জয়ের দু'বছর আগে বিয়ে করলেও সংসারে তার মন ছিল না বরং তার মন বই পত্র এবং চিন্তার জগতেই মগ্ন থাকতো।


মৃত্যুঞ্জয়ের প্রতি নিখিলের ব্যবহার কেমন ছিল ?

আদর্শবাদী মৃত্যুঞ্জয় কে মৃত হিংসা এবং সামান্য অবজ্ঞা করলেও নিখিল তাকে শুধু পছন্দই করত না তার প্রতি শ্রদ্ধা মিশ্রিত ভালোবাসাও ছিল।


মৃদু ঈর্ষার সঙ্গেই সে তখন ভাবে যে..." - কখন ভাবে ?

  নিখিল মাঝেমধ্যে যখন মৃত্যুঞ্জয়ের মানসিক শক্তির কাছে কাবু হয়ে পড়ে তখনই সে মৃদু ইরশার সঙ্গে ভাবে।


মরে গেল না খেয়ে মরে গেল -  এই কথাটা মৃত্যুঞ্জয় নিখিলকে কিভাবে বলেছিল ?

আলোচ্য উক্তিটি মৃত্যুঞ্জয় অন্যমনস্কভাবে অস্ফুট বাক্যে আর্তনাদের মত করে নিখিলকে বলেছিল।


সেটা আশ্চর্য নয় -  কোনটা আশ্চর্য নয় ? 

ফুটপাতে অনাহারে মৃত্যুর মতো সাধারণ এবং সহজ পদ্ধতি যে মৃত্যুঞ্জয় ধারণায় আনতে পারছে না নিখিলের কাছে তা আশ্চর্য বলে মনে হয় না।


মৃত্যুঞ্জয়ের মানসিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল ?

মৃত্যুঞ্জয়ের মানসিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া মোটেও সৎ বা নিস্তেজ ছিল না শক্তির একটা উৎস ছিল তার মধ্যে।


এ অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত কি -  এই উক্তি করার কারণ কি ?

কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পে মৃত্যুঞ্জয় বেঁচে থাকা সত্ত্বেও একটা লোক না খেতে পেয়ে ফুটপাতে মারা গেল আলোচ্য অংশে সেই অপরাধের কথাই বলা হয়েছে।


শত ধিক আমাকে -  বক্তা নিজেকে ধিক্কার দেওয়ার কারণ কি ?

মৃত্যুঞ্জয় নিজেকে ধিক্কার দিয়েছিল কারণ দেশের লোকের অনাহারে মৃত্যুর কথা জেনে শুনেও সে চার বেলা পেট করে ভাত খেয়েছে।


তখন সে রীতিমতো কাবু হয়ে পড়েছে " -  তার কাবু হওয়ার কারণ কি ছিল ?

কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্রের মৃত্যুঞ্জয় ফুটপাতে একদিন অনাহারে মৃত্যু দেখার পর অফিসে গিয়ে কাবু হয়ে পড়েছিল।


হয়তো মৃদু একটু অবকার সঙ্গে ভালোও বাসে " -  কে কাকে ভালোবাসে ?

মৃত্যুঞ্জয়ের অফিসের সহকর্মী বন্ধু নিখিল তাকে পছন্দ করলেও তার প্রতি ভালোবাসাটা ছিল একটু অবজ্ঞা মিশ্রিত।


মৃত্যুঞ্জয়ের সুস্থ শরীরটা অসুস্থ হয়ে গেল" -  মৃত্যুঞ্জয়ের অসুস্থতার কারণ কি ?

   মৃত্যুঞ্জয় একদিন অফিসে যাওয়ার পথে ফুটপাতে অনাহারে মৃত্যুর মতো এক বীভৎস দৃশ্য দেখে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল।


কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর

 সাধারণভাবে আমরা মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন গল্পগুলিতে মনস্তাত্ত্বিক টানাপোড়েন লক্ষ্য করতে পারি। ঠিক একই রকম ভাবে কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পটিতে মৃত্যুঞ্জয়ের জীবনে এক মনস্তাত্ত্বিক টানাপোড়েন ঘটেছে। যে মনস্তাত্ত্বিক টানাপোড়েনের কারণে তার সুস্থ সবল ও সুখী পরিবার জীবন ছেড়ে নিজেকে মন্বন্তরের বুভুক্ষ মানুষদের মাঝখানে নিজেকে দাঁড় করাতে সে দ্বিধাবোধ করেনি।

    এমনকি নিজে না খেয়ে সমস্ত দেশকে হয়তো বা বাঁচানো যেতে পারে এই ধারণা তে সে নিজেই ধীরে ধীরে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয় ও একসময় নিজেই নিজের জীবনটিকে অন্য সকল অনাহারী মানুষের সারিতে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। 

    এই গল্পটি থেকে যেসকল প্রশ্নগুলি সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের জন্য তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পাঁচটি প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করলাম যদি প্রয়োজন হয় নিচে কমেন্ট করলে আমি অন্য সকল প্রশ্নগুলি এখানে আলোচনা করে দিতে পারব।


প্রশ্ন 1 :  মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের "কে বাঁচায় কে বাঁচে" গল্পের নাম করণের স্বার্থকতা আলোচন করো ।


     সাহিত্যের ক্ষেত্রে নামকরণ একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয়। আর ছোটো গল্পের নামকরণ আরো বেশী গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ছোট গল্পের বিষয় তার নাম করণের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পায়। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেশিরভাগ গল্প গুলিতে বিশেষ আদর্শ যুক্ত মানুষের প্রতিবাদ শিল্প রূপ লাভ করেছে। 

    কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের কাহিনী অত্যন্ত সাদামাটা এবং এই সাধারণ কাহিনীতে মৃতুঞ্জয়ের জীবন ছবিতে এক ব্যতিক্রমী রূপ ধরা পড়েছে। গল্পটির শুরু হয়েছে  এক অনাহারে মৃত্যুর দৃশ্য দিয়ে, আর মৃত্যুঞ্জয় ওই মৃত্যু দেখে অপরাধবোধে পীড়িত হয়। সাথে সাথে আদর্শবাদী মৃত্যুঞ্জয়ের পারিবারিক জীবনে নেমে আসে কালো মেঘের ছায়া। এমনকি অফিসের সারা মাসের মাইনে টা বন্ধু নিখিলকে দিয়ে রিলিফ ফান্ডে দান করে দেয়।

    ধীরে ধীরে মৃত্যুঞ্জয় ঘর ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে আসে শহরের ফুটপাতে দুর্ভিক্ষ পীড়িত দের মাঝখানে। অভুক্ত মানুষ গুলির মধ্য থেকে মৃত্যুঞ্জয় নিজেই প্রতিবাদহীন হয়ে পড়ে এবং আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই লঙ্গরখানার খিচুড়ি খায়, ফুটপাতে পড়ে থাকে।

    অনাহারক্লিষ্ট দের বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যুঞ্জয় নিজেই নিজেকে সর্বহারাদের মধ্যে নিয়ে গেছে। কিন্তু মৃত্যুঞ্জয় এইভাবে নিজেকে যেমন বাঁচাতে পারেনি তেমনি অনাহারীদের ও বাঁচাতে পারেনি। তাই অন্যকে বাঁচাতে গিয়ে গল্পের নায়ক নিজেকে শেষ করে ফেলেছে। সেই কারণে কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পটির নামকরণেে যে সার্থকতা  কোন সন্দেহ নেই।

    অনাহারক্লিষ্ট দের বাঁচাতে গিয়ে গল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয় নিজেই অনাহারে জীবন সঁপে দিয়েছে, এমনকি তার স্ত্রী অর্থাৎ টুনুর মাকেও সেই পথে যেতে বাধ্য হতে হয়েছে তাই এইসব দিকে বিচার করলে গল্পটির নাম যথাযথভাবেই সার্থক।
Ke-bachay-ke-bache
কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের প্রশ্ন উত্তর | কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের বড়ো প্রশ্ন উত্তর pdf



প্রশ্ন: 2 :   "কে বাঁচায় কে বাঁচে" গল্পের নিখিল চরিত্র সম্পর্কে আলোচনা করো। 


     মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় "কে বাঁচায় কে বাঁচে" গল্পের নায়ক চরিত্র মৃত্যুঞ্জয় কে উজ্জ্বল করে তোলার জন্য নিখিল নামে একটি বাস্তব বুদ্ধি সম্পন্ন চরিত্র সৃষ্টি করেছেন। প্রখর বুদ্ধি মান এই রোগা যুবকটি কিছুটা অলস প্রকৃতির দুই সন্তানের পিতা নিখিলের সংসারের প্রতি তেমন কোনো টান ছিল না, সে অবসর সময়ে বই পড়ে সময় কাটাতে ভালোবাসতো।

    অন্যদিকে সমপদস্থ কর্মী হলেও নিখিলের থেকে মৃত্যুঞ্জয়ী 50 টাকা বেশি মাইনে পেতেন। দুই বন্ধুর মধ্যে একটু অবজ্ঞা মিশ্রিত ভালোবাসা জড়িয়ে ছিল, তবে মৃত্যুঞ্জয়ের মানসিক শক্তির কাছে নিখিল কিছুটা নিস্তেজ ছিল। এই কারণে নিখিল আফসোস করে বলতো যে - সে যদি মৃত্যুঞ্জয় হতো তাহলে মন্দ হত না।

    নিখিল চরিত্র একটু অন্যধরনের হলেও মৃত্যুঞ্জয় চরিত্রটিকে সবার উপরে তুলে দিয়েছে। মৃত্যুঞ্জয় কে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে নিখিল যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন। এমনকি মৃত্যুঞ্জয়ের অফিসে ছুটির ব্যবস্থা পর্যন্ত করে দিয়েছে নিখিল।

    মৃত্যুঞ্জয়ের মত নিখিল ও দুর্ভিক্ষ দেখে কাতর হয়েছে, কিন্তু সে তার মত ভেঙে পড়েনি বরং সে মৃত্যুঞ্জয় কে বোঝাতে চেয়েছে, - পাশবিক স্বার্থপরতা এর মধ্য দিয়ে মানুষ বেঁচে থাকতে পারেনা। মৃত্যুঞ্জয়ের পরিবারের প্রতি তার আন্তরিক ভালোবাসা ও কম ছিলনা, কেননা মৃত্যুঞ্জয় বাড়ির বাইরে চলে গেলে নিখিল সবসময় তাদের পাশে থেকেছে। তাই গল্পটির মধ্যে নিখিল শুধুমাত্র একটি চরিত্র নয় তা হৃদয়বান ও বাস্তব চরিত্র। Ke-bachay-ke-bache
কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের প্রশ্ন উত্তর | কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের বড়ো প্রশ্ন উত্তর pdf




প্রশ্ন - ৩ :   কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পে টুনুর মা চরিত্রটি আলোচনা করো।


     মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পে ব্যতিক্রমী প্রধান চরিত্র হলো মৃত্যুঞ্জয়, আর এই গল্পে স্বামী অন্তপ্রাণ, সহধর্মিণী ও মমতাময়ী নারী হল টুনুর মা। নামহীন এই চরিত্রটি শারীরিকভাবে রুগ্ণ হলেও মন্বন্তরের দাবানলে নিজের পরিবার সম্পর্কে উদাসীন হয়ে যাওয়া স্বামীর স্বভাব কে মনেপ্রাণে মেনে নিয়েছে। 

    টুনুর মা যে শুধু মৃত্যুঞ্জয় কে ভালোবাসতো তাই নয় তাকে যথেষ্ট সম্মান করতো। মৃত্যুঞ্জয় বাড়ি ত্যাগ করলে টুনুর মা শয্যাশায়ী অবস্থায় বারবার স্বামীকে খোঁজ করার চেষ্টা করেছেন, এমনকি নিখিলকে অনুরোধ করেছেন মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে সঙ্গে থাকতে। বাঙালি ঘরের আদর্শ বউ এর মত টুনুর মা মৃত্যুঞ্জয়ের হাত ধরে পথে বেরোতে দ্বিধাবোধ করেনি। 

   টুনুর মা নিখিলকে জানিয়েছিল - সে বিছানা ছেড়ে যদি উড়তে পারত তবে মৃত্যুঞ্জয়কে একা একা ছেড়ে দিত না। এমনকিিি মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে সেও নিজেকে পাগল করে তুলেছে, এবং ছেলে - মেয়ে ও সংসারের ভাবনাা সে ত্যাগ করেছে।

    স্বামীর মতন টুনুর মা ফুটপাতে পড়ে থাকা ওই লোকগুলির জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছিল। টুনুর মা চরিত্রটি গল্পের একটি অপ্রধান চরিত্র হলেও স্বামীর আদর্শকে গ্রহণ করে স্বামীকে আরো বেশি উজ্জ্বল করে তুলেছে। আর এখানেই গল্পটিতে টুনুর মা চরিত্রটির বৈশিষ্ট্য আরো বেশি করে প্রকাশিত হয়েছে।Ke-bachay-ke-bache
কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের প্রশ্ন উত্তর | কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের বড়ো প্রশ্ন উত্তর pdf




প্রশ্ন - ৪ :  "মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির অবস্থা শোচনীয়।" - মৃত্যুঞ্জয় কে? তার বাড়ির অবস্থা শোচনীয় কেন? (২০১৫ উ মা )


     প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কে বাঁচায় কে বাঁচে ছোট গল্পটির প্রধান ও উজ্জ্বল চরিত্র মৃত্যুঞ্জয়। 

    কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয় অফিস যাবার পথে প্রথম ফুটপাতে অনাহারে মৃত্যুর দৃশ্য দেখে ভেতরে ভেতরে পাল্টাতে থাকে। নিজের মধ্যে একটি অপরাধবোধ ধীরে ধীরে তাকে গ্রাস করতে থাকে এমনকি তার ব্যক্তিগত জীবনে আসে একাধিক পরিবর্তন। 

    তার ব্যক্তিগত পরিবর্তনের কারণে সংসার জীবনে নানান পরিবর্তন আসতে শুরু করে একবেলা খেয়ে অন্য খাবার অভুক্তদের বিলি করতে শুরু করে। এমনকি তার মাস মাইনের টাকাটা পর্যন্ত রিলিফ ফান্ডে দান করতে থাকে। ধীরে ধীরে সে বাড়ি ত্যাগ করে ও শহরের রাস্তাঘাটে গাছতলায়ও ডাস্টবিনের ধারে অভুক্ত মানুষের সাথে ঘুরতে শুরু করে।

    অন্যদিকে মৃত্যুঞ্জয়ের এই পরিবর্তনে ও মানসিক অবস্থা দেখে তার স্ত্রী ধীরে ধীরে শয্যাশায়ী হয়ে পড়ে। মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির অন্য সদস্যদের মতো সেও স্বামীর জন্য উৎকণ্ঠিত হয়ে নিখিলকে তার সঙ্গে থাকতে অনুরোধ জানাই। মৃত্যুঞ্জয়ের এই অবস্থার কারণে তার স্ত্রী ও তার হাত ধরে রাস্তায় নেমে আসে বাড়িতে ছেলেমেয়েগুলো কাতর হয়ে পড়ে। 

    মৃত্যুঞ্জয়ের মানসিক পরিবর্তনের কারণে সে বাড়ি ত্যাগ করে তার সাথে তার স্ত্রীও বাড়ি ত্যাগ করলে পারিবারিক জীবনে চরম অশান্তি নেমে আসে। মৃত্যুঞ্জয়ের পরিবর্তনের কারণে তার বাড়ির অবস্থা শোচনীয় বলে গল্পে বলা হয়েছে।


প্রশ্ন: 5

  “ধিক্! শত ধিক্ আমাকে”–বক্তা কে ? বক্তার চরিত্র সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো। 


   প্রশ্নোকৃত অংশটির বক্তা হলেন মৃত্যুঞ্জয়। 

   মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'কে বাঁচায়, কে বাঁচো' ছোটোগল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্রটি পর্যালোচনা করতে গেলে নীচের বিষয়গুলি চোখে পড়ে -

নীতিপরায়ণতা: মৃত্যুঞ্জয় একজন সৎ, মধ্যবিত্ত চাকুরিজীবী। নিরীহ, শান্ত, দরদি, ভালোমানুষ এই যুবকটি ন্যায়নীতিবোধের অবক্ষয়ের যুগেও বুকের ভেতরে আদর্শবাদের প্রায় হারিয়ে যাওয়া এক ঐতিহ্য পুষে রাখে।


 আবেগপ্রবণতা: মুহ্ল্যুঞ্জয় একদিন অফিস যাওয়ার পথে হঠাৎই ফুটপাথে অনাহারে মৃত্যুর দৃশ্য দেখে ফেলে। দুর্ভিক্ষের সময় এমন দৃশ্য খুব স্বাভাবিক হলেও আবেগপ্রবণ মৃত্যুঞ্জয় এই দৃশ্য দেখে প্রচন্ড আঘাত পায় । তারপর থেকে সে ক্রমে ক্রমে ভিতরে-বাইরে পালটে যেতে শুরু করে| অপরাধবোধে অস্থির মৃত্যুঞ্জয় ও তার স্ত্রী একবেলা না খেয়ে সে খাবার দুর্ভিক্ষপীড়িতদের মধ্যে বিলিয়ে দেয়। এমনকি, মাসের পুরো মাইনেটা সে তহবিলে দান করে দেয়।


বিকারগ্রস্ততা:  মৃত্যুঞ্জয় অচিরেই বাস্তব চিত্রটা বুঝতে পারে যে, যথাসর্বস্ব দান করলেও অনাহারী মানুষগুলোর কিছুমায় ভালো করতে পারবে না সে। এই ব্যর্থতাই তাকে মানসিকভাবে আরও বিপর্যস্ত করে তোলে। দিন দিন মুষড়ে যেতে থাকে মৃত্যুঞ্জয়। এরপর তাই সে অন্নপ্রার্থীদের ভিড়ে ঘুরতে ঘুরতে একসময় তাদেরই একজন হয়ে যায়। অফিসে এবং ধীরে ধীরে বাড়িতে যাওয়াও বন্ধ করে দেয় মৃত্যুঞ্জয়। ছেঁড়া ন্যাকড়া পরে, খালি গায়ে সে অনাহারীদের সঙ্গে ফুটপাথে পড়ে থাকে এবং লঙ্গরখানার খিচুড়ি কাড়াকাড়ি করে খেতে শুরু করে।


  সুতরাং, মৃত্যুঞ্জয় চরিত্রটি দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষদের প্রতিবাদে, প্রতিরোধে বা সংগ্রামে উদ্‌বুদ্ধ করতে না পারলেও সে যে মধ্যবিত্তের খোলস ত্যাগ করে সর্বহারা শ্রেণির মধ্যে বিলীন হতে পেরেছে, এটাও কম কৃতিত্বের নয়।


প্রশ্ন: 6

  ফুটপাথে অনাহার-মৃত্যু দেখার পর থেকে মৃত্যুরয় কীভাবে সম্পূর্ণ পালটে গেল, তা 'কে বাঁচায়, কে বাঁচে' ছোটোগল্প অবলম্বনে লেখো।


অথবা, 


"তারপর দিন দিন কেমন যেন হয়ে যেতে লাগল মৃত্যু।” – মৃত্যুয় ধীরে ধীরে যেভাবে পরিবর্তিত হয়েছিল তা গল্প অবলম্বনে লেখো।


 অথবা,

 "তারপর মৃত্যুঞ্জয়ের গা থেকে ধূলিমলিন সিন্ধের জামা অদৃশ্য হয়ে যায়।” – মন্তব্যটির আলোকে 'কে বাঁচায় কে বাঁচে' গল্পের মৃত্যুঞ্জয়ের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো 


   মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কে বাঁচায় কে বাঁচে' ছোটোগল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয় একদিন বাড়ি থেকে অফিস যাওয়ার পথে ফুটপাথে অনাহার-মৃত্যু দেখে নিজেকে চরম অপরাধী বলে ভাবতে শুরু করে। দুর্ভিক্ষের দেশে চারবেলা পেট ভরে খাওয়া এবং অবসরযাপনের সুখকল্পনায় দিন কাটানোর গ্লানিতে তার মন ভরে ওঠে| সস্ত্রীক একবেলা না খেয়ে ওই খাবার সে অভুক্তদের বিলোনো শুরু করে । কিন্তু এতেও তার হতাশা দূর হয় না। নিখিলের মাধ্যমে পুরো মাসের মাইনেটা সে ত্রাণ তহবিলে দান করে দেয়।


   ক্রমশ সে অফিসে অনিয়মিত হয়ে পড়ে, কাজে ভুল করে, প্রায়ই চুপচাপ বসে ভাবে। শহরের গাছতলায়, ডাস্টবিনের ধারে বা ফুটপাথে পড়ে থাকা দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষগুলিকে দেখতে ঘুরে বেড়ায়। এভাবে ধীরে ধীরে ফুটপাথই হয়ে ওঠে তার আস্তানা।


   এরপর তার গা থেকে ধূলিমলিন সিল্কের জামা ও ধুতি অদৃশ্য হয়ে তার পোশাক হয়ে দাঁড়ায় ছেঁড়া কাপড়। আদুর গায়ে জমে মাটির স্তর, দাড়িতে মুখ ঢেকে যায়। একটি ছোটো মগ হাতে আরও দশজন অনাহারীর মতো সেও লঙ্গরখানায় লাইন দিয়ে কাড়াকাড়ি করে খিচুড়ি খায়, গ্রাম থেকে আসা দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষগুলির মতো একঘেয়ে সুরে সেও বলা শুরু করে—“গাঁ থেকে এইছি। খেতে পাইনে বাবা | আমায় খেতে দাও!”


   এভাবেই মধ্যবিত্ত যুবক মৃত্যুঞ্জয় মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই তার পেশা,পরিবার ও সমাজকে ত্যাগ করে ফুটপাথের জীবনে মিশে যায়।


7.  মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির অবস্থা শোচনীয়।"- মৃত্যুঞ্জয় কে ? তার বাড়ির অবস্থা শোচনীয় কেনো ?

   মানিক বন্দ্যপাধ্যায়ের কে বাঁচায় কে বাঁচে ছোট গল্পের প্রধান চরিত্র যুবক মৃত্যুঞ্জয়।

   মৃত্যুঞ্জয় ফুটপাথে অনাহার মৃত্যুর দৃশ্য দেখার পর থেকে ভেতরে-বাইরে ক্রমশ পালটে যেতে থাকে । অপরাধবোধে দীর্ণ হয়ে সে বাড়িতে ভালো করে খেতে ও ঘুমোতে পারে না। একবেলা সম্ভীক না খেয়ে সেই খাবার সে অভুক্তদের বিলোনো শুরু করে। এমনকি, মাইনের দিন নিখিলের মাধ্যমে পুরো বেতনটাই সে ত্রাণ তহবিলে দান করে দেয় ।


   এদিকে অফিসে তার আসা- যাওয়ারও ঠিক থাকে না। কাজে ভুল করে, প্রায়ই চুপচাপ বসে থেকে ভেবে চলে সে। বাড়িতেও বিশেষ না থেকে শহরের গাছতলায়, ডাস্টবিনের ধারে বা ফুটপাথে পড়ে থাকা মন্বন্তরগ্রস্ত মানুষগুলিকে দেখতে সে ঘুরে বেড়াতে থাকে। মৃত্যুঞ্জয়ের এমন অবস্থার জন্যই তার বাড়ির শোচনীয় অবস্থা হয়েছিল।


  মৃত্যুঞ্জয়ের এই অবস্থায় তার স্ত্রী শয্যাশায়ী হয়ে পড়ে। শুয়ে থেকেই সে বাড়ির সদস্যদের মৃত্যুঞ্জয়ের খোঁজ করার জন্য বাইরে পাঠায়। তারাও মৃত্যুঞ্জয়ের খোঁজে বাইরে বেরিয়ে তাকে না পেয়ে ফিরে আসে এবং মিথ্যা সান্ত্বনা দিয়ে জানায় যে, মৃত্যুঞ্জয় কিছু পরেই বাড়ি ফিরবে


  এই সান্ত্বনা স্তোকবাক্য বলে তারা হয় গম্ভীর হয়ে থাকে, নতুবা কাঁদো কাঁদো মুখে বসে থাকে। মৃত্যুঞ্জয়ের ছেলেমেয়েরা খিদের জ্বালায় মাঝেমধ্যেই চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। মৃত্যুঞ্জয়ের অনুপস্থিতিতে তার পরিবারের লোকেদের এমন শোচনীয় অবস্থাই হয়েছিল।


8.  "...তার অভিজ্ঞতার কাছে কথার মারপ্যাচ অর্থহীন হয়ে গেছে।”— কার অভিজ্ঞতা? এমন বলার কারণ কী ?

  মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'কে বাঁচায়, কে বাঁচে' গল্পে উপর্যুক্ত মন্তব্যটিতে গল্পের মূল চরিত্র মৃত্যুঞ্জয়ের কথা বলা হয়েছে ।

   ফুটপাথবাসী দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষদের সহমর্মী মৃত্যুঞ্জয় তাদের দুঃখকষ্ট, জীবনযাপনকে একেবারে কাছ থেকে দেখতে দেখতে নিজেও ফুটপাথের বাসিন্দা হয়ে যায়। সে অফিস যাওয়া কধ করে, এমনকি নিশ্চিন্ত গৃহকোণও ত্যাগ করে।


   প্রথমদিকে শহরের আদি-অন্তহীন ফুটপাথ ধরে ঘুরে বেড়ালেও কালক্রমে সে ফুটপাথেরই বাসিন্দা হয়ে যায়। তার মধ্যে এইসময় চেতনাগত পরিবর্তন ঘটে, মৃত্যুঞ্জয়ের স্ত্রীর মন্তব্যের মধ্যে যার আভাস মেলে। সে বলে “কেমন একটা ধারণা জন্মেছে, যথাসর্বস্ব দান করলেও কিছুই ভাল করতে পারবেন না। দারুণ একটা হতাশা জেগেছে ওর মনে। একেবারে মুষড়ে যাচ্ছেন দিনকে দিন।"


   দুর্ভিক্ষের রূঢ় বাস্তবতা মৃত্যুঞ্জয়ের মানসিক শৃঙ্খলাকে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত করে দেয়। এর কোনো যথাযথ সমাধান বা প্রতিকারের উপায় তার কাছে না থাকায় সে হতাশ হয়ে পড়ে। নিখিল চেষ্টা করে মৃত্যুঞ্জয়কে বুঝিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে, কিন্তু তার চোখ দেখলেই বোঝা যায় যে, তার কথার অর্থ মৃত্যুঞ্জয় বুঝছে না।


  একদিন ফুটপাথবাসী বুভুক্ষু মানুষদের সাথে কাটিয়ে যে বিপুল অভিজ্ঞতা সে সঞ্চয় করেছে সেখানে মানসিক শৃঙ্খলা বজায় রেখে চলা সম্ভব হয় না। কোনো তত্ত্বকথাই তার সেই ভয়ংকর বাস্তব অভিজ্ঞতাকে ভুলিয়ে দিতে পারে না। আর তার ফলেই নিখিলের বলা কথাগুলো মৃত্যুঞ্জয়ের কাছে অর্থহীন হয়ে যায়।



9.  “ওটা পাশবিক স্বার্থপরতা”— বক্তা কে? কোন্ কাজকে পাশবিক স্বার্থপরতা বলা হয়েছে?

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'কে বাঁচায়, কে বাঁচে' ছোটোগল্প থেকে সংকলিত এই উদ্ধৃতিটির বক্তা হল মৃত্যুঞ্জয়

   পঞ্চাশের মন্বন্তরকালে হঠাৎই একদিন ফুটপাথে অনাহার-মৃত্যু দেখে মৃত্যুঞ্জয় অপরাধবোধে দীর্ণ হয়ে পড়ে। তার প্রিয় বন্ধু নিখিলের এতে মন খারাপ হয়। তবুও সে ভাবে যে, সব মানুষের সকল সহানুভূতি একত্রিত করে অনাহারীদের খিদের আগুনে ঢাললেও তা নিভবে না, উলটে তা ইন্ধনই পাবে। তার মতে, ভিক্ষাদানের মতো পাপকর্ম সাধারণ মানুষের কাছে সৎকর্ম হিসেবে বিবেচিত হয় বলেই মানুষের অন্নের দাবি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না ।


   এরপর মাইনের দিন মৃত্যুঞ্জয় যখন তার মাইনের সব টাকা নিখিলের মাধ্যমে ত্রাণ তহবিলে দান করে দেয়, তখন আর নিখিল স্থির থাকতে পারে না। পরিবারের প্রতি মৃত্যুঞ্জয়ের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে সে মৃত্যুঞ্জয়কে জানায় যে, মন্বন্তরকালে ভূরিভোজ অন্যায় হলেও উপোস করে মৃত্যুবরণ করাও একেবারেই উচিত নয়। তাই বেঁচে থাকার জন্য যতটুকু খাদ্যের প্রয়োজন, ততটুকুই সে গ্রহণ করে। নিখিল আরও জানায় যে, যতদিন অবধি আত্মরক্ষার উপযোগী ন্যূনতম খাদ্য সে জোগাড় করতে পারবে, ততদিন অবধি সে সেই খাদ্য গ্রহণ করবে।


   দেশের সমস্ত লোক মরে গেলেও সে অন্যকে সেই আত্মরক্ষার উপযোগী খাবার দিতে পারবে না। সমাজধর্মের দিক থেকে বলা যায় যে ১০ জনকে হত্যা করার চেয়ে নিজে না খেয়ে মৃত্যুবরণ করা আরো বেশি অপরাধ। মৃত্যুঞ্জয় নিখিলের এই কাজ বা মানসিকতা কেই পাশবিক স্বার্থপরতা বলেছে।


10.  'সেদিনের পর থেকে মৃত্যুব্জয়ের মুখ বিষণ্ণ গম্ভীর হয়ে আছে।”—কোন্ দিনের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে? সেদিনের পর থেকে মৃত্যুঞ্জয়ের মুখ কেন বিষণ্ন গম্ভীর হয়ে গিয়েছিল ?

  মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'কে বাঁচায়, কে বাঁচে' ছোটোগল্পের প্রধান চরিত্র মৃত্যুঞ্জয় মন্বন্তরের সময়কালে যেদিন বাড়ি থেকে অফিস যাওয়ার পথে ক ফুটপাথে একটি অনাহার-মৃত্যুর বীভৎস দৃশ্য দেখেছিল, সেই দিনটির কথাই প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে বলা হয়েছে।


   এতকাল অবধি মৃত্যুঞ্জয় না-খেতে পেয়ে মরার কথা কেবল শুনেছিল বা পড়েছিল | মন্বন্তরের সময় প্রায়শই ফুটপাথে অনাহার-মৃত্যু ঘটলেও তা ছিল মৃত্যুঞ্জয়ের জীবনের প্রথম অভিজ্ঞতা ।


  মৃত্যুঞ্জয় ছিল ন্যায়নীতিবোধসম্পন্ন, অনুভূতিশীল, সাদাসিধে ভালোমানুষ । মানবসভ্যতার নষ্ট হয়ে যাওয়া যে সুপ্রাচীন ঐতিহ্য— আদর্শবাদ, তার কল্পনায় এবং সাধনায় মৃত্যুঞ্জয় নিজেকে সম্পূর্ণভাবে সঁপে দিয়েছিল । জীবনে প্রথম ফুটপাথে অনাহার-মৃত্যুর বীভৎস দৃশ্য প্রত্যক্ষ করার পরে মৃত্যুঞ্জয়ের মনে এই অনাহার-মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নানা প্রশ্ন জেগে ওঠে। খিদের যন্ত্রণা না মৃত্যুযন্ত্রণা কোন্‌টা বেশি কষ্টকর তা নিয়েও তার মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।


    তার মনে হয় তার মতো স্বচ্ছল মধ্যবিত্তদের দরিদ্র মানুষের জীবনযন্ত্রণা সম্পর্কে উদাসীনতাই হয়তো এর কারণ। এই মৃত্যুর ঘটনাটা মৃত্যুঞ্জয়কে এমন আহত করেছিল, অপরাধবোধে দীর্ণ করে দিয়েছিল যে, তারপর থেকেই সে বিষণ্ণ ও গম্ভীর হয়ে গিয়েছিল।


11.  “নিখিল ভেবেছিল বন্ধুকে বুঝিয়ে বলবে এভাবে দেশের লোককে বাঁচানো যায় না।” –কোন্ প্রসঙ্গে নিখিলের এই ভাবনা? এই ভাবনার মাধ্যমে নিখিলের চরিত্রের কোন বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পেয়েছে?

    মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'কে বাঁচায়, কে বাঁচে' ছোটোগল্পে আমরা দেখি। ফুটপাথে অনাহার মৃত্যু দেখার পর অফিসের মাইনের দিন মৃত্যুঞ্জয় সব টাক নিখিলের হাতে দেয় ত্রাণ তহবিলে দান করার জন্য। বিস্মিত নিখিলের প্রশ্নের উত্তরে সে জানায় যে তারা সস্ত্রীক একবেলার ভাত দান করে দিচ্ছে। টুনুর অসুস্থ বলে মৃত্যুঞ্জয় তাকে খেতে বললেও পতিব্রতা স্ত্রী তা শোনে না। এই প্রসঙ্গেই নিখিল এমনটা ভেবেছিল ।


   মৃত্যুঞ্জয়ের সহকর্মী নিখিল একজন হৃদয়বান, সামাজিক মানুষ। তবু 'পঞ্চাশের মন্বন্তর'-এর অনাহার-মৃত্যুগুলি তার কাছে ছিল 'সাধারণ সহজবোধ্য ব্যাপার। অনাহার-মৃত্যু দেখে ভেঙে পড়া মৃত্যুঞ্জয়কে লক্ষ করে তার মনে হয়েছে যে, সব মানুষের সব সহানুভূতি অনাহারীদের খিদের আগুনে ঢাললেও তা নিভবে না, উলটে তা ইন্ধনই পাবে।


   তার মতে ভিক্ষাদানের মতো পাপকর্ম সাধারণ মানুষের কাছে সৎকর্ম হিসেবে বিবেচিত হয় বলেই মানুষের অন্নের দাবি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। ত্রাণের ফলে কিছু লোক খেতে পেলেও আড়ালে থাকা আরও অনেক মানুষ না খেতে পেয়েই মারা যায়। তার মতে, এই অবস্থায় মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তদের আকণ্ঠ-আহার অন্যায় হলেও উপোস করে মারা যাওয়াটাও একান্তই অনুচিত।


   কারণ, নীতিধর্ম নয়, সমাজধর্মের দিক থেকেই নিখিল মনে করে, দশজনকে খুন করার থেকে বড়ো অপরাধ হল নিজে না খেয়ে মরা। মৃত্যুঞ্জয় একে "পাশবিক স্বার্থপরতা" বললে নিখিল জানায় যে, অনাহারীরা যদি এমন স্বার্থপর হতে পারত, তবে “অন্ন থাকতে বাংলায় না খেয়ে কেউ মরত না। তা সে অন্ন হাজার মাইল দূরেই থাক বা একত্রিশটা তালা লাগানো গুদামেই থাক।” এই ভাবনার মাধ্যমে নিখিলের চরিত্রের বাস্তববাদী বৈশিষ্ট্যই প্রকাশিত হয়েছে।



12. ‘কে বাঁচায়,কে বাঁচে’ গল্প অবলম্বনে টুনুর মা চরিত্রটির ভূমিকা আলোচনা কর।


  মানিক বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়ের লেখা ‘কে বাঁচায়,কে বাঁচে’ গল্পের প্রধান চরিত্র মৃত‍্যুঞ্জয়ের স্ত্রী হল এই টুনুর মা।টুনুর মা কে আলোচ‍্য গল্পের একটি অপ্রধান চরিত্র হিসাবে দেখানো হলেও মৃত‍্যুঞ্জয়ের স্ত্রী হিসাবে তার ভূমিকা কোন অংশে কম ছিল না।গল্পটিতে এই চরিত্রটির কোন নাম নেই।সমগ্ৰ গল্পটিতেই তিনি মৃত‍্যুঞ্জয়ের স্ত্রী তথা টুনুর মা হিসাবে পরিচিত।যখন মৃত‍্যুঞ্জয়ের বাড়ির অবস্থা শোচনীয় হয়ে ওঠে তখন আমরা এই টুনুর মা এর সঙ্গে পরিচিত হই।টুনুর মা কেবল উদার,স্নেহময়ী,মমতাময়ী ছিল না,তিনি স্বামীকে এবংস্বামীর আদর্শকেও সম্মান করতেন।


   গল্পটিতে আমরা দেখি , টুনুর মা যখন অসুস্থ এবং তার বাড়ির অবস্থা যখন শোচনীয় তখন তিনি বিছানায় পড়ে থেকেই বাড়ির ছেলে বুড়োকে তাগাদা দিয়ে স্বামীর খোঁজে বাইরে পাঠান।কেননা মৃত‍্যুঞ্জয় আজকাল ঠিকমতো বাড়িতে না এসে,অফিসে না গিয়ে শহরের আদি-অন্তহীন ফুটপাথে ঘুরে ঘুরে অনাহারী মানুষদের দেখে।তাই টুনুর মা নিখিলকে সকাতরে অনুরোধ করে যে–

“সে যেন একটু নজর রাখে মৃত‍্যুঞ্জয়ের দিকে,একটু যেন সে সঙ্গে থাকে তার।”

এর মধ‍্যে দিয়ে টুনুর মার সংসারের প্রতি যেমন দায়বদ্ধতা যেমন প্রকাশ পেয়েছে তেমনি প্রকাশ পেয়েছে স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।এইখানেই শেষ নয়,টুনুর মা নিখিলকে জানায় তিনি যদি বিছানা থেকে উঠতে পারতেন তাহলে মৃত‍্যুঞ্জয়ের সঙ্গেই ঘুরতেন।কেননা মৃত‍্যুঞ্জয়ের সঙ্গে থেকে থেকে তিনিও মৃত‍্যুঞ্জয়ের মতো হয়ে গেছেন।প্রসঙ্গত টুনুর মা নিখিলকে জানায়— 


“উনি পাগল হয়ে যাচ্ছেন,আমারও মনে হচ্ছে পাগল হয়ে যাব।ছেলেমেয়েগুলির জন‍্য সত‍্যি আমার ভাবনা হয় না।কেবলি মনে পড়ে ফুটপাথের ওই লোকগুলির কথা।আমাকে দু-তিন দিন সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন।”


  অর্থাৎ মৃত‍্যুঞ্জয়ের মতো তিনিও যে পাগল হয়ে যাবেন তা বলতে দ্বিধা করেন নি। ছেলেমেয়েদের জন‍্য ভাবনা চিন্তা না থাকলেও ফুটপাথের সেই অনাহারী লোকেদের কথা টুনুর মার কেবলি মনে পড়ে। এরপর টুনুর মা নিখিলকে জানায়-“আচ্ছা, কিছুই কি করা যায় না।” কেননা এই সমস্ত ভাবনাতেই মৃত‍্যুঞ্জয়ের মাথা খারাপ হচ্ছে,আর দারুণ একটা হতাশা জেগেছে ওর মনে।তাই টুনুর মা জানায়-–“একেবারে মুষড়ে যাচ্ছেন দিনকে দিন।”


  আলোচ‍্য গল্পটিতে গল্পকার টুনুর মার চরিত্রটিকে অপ্রধান চরিত্র হিসাবে দেখালেও টুনুর মার উদার,স্নেহময়ী,মমতাময়ী রুপটিকে যেমন ফুটিয়ে তুলেছেন তেমনি স্বামীর প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধা,ভালোবাসার স্বরূপটিও অঙ্কন করেছেন।


13.  “কে বাঁচায় কে বাঁচে” গল্পের নিখিল চরিত্র সম্পর্কে আলোচনা করো।

   মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় “কে বাঁচায় কে বাঁচে” গল্পের নায়ক চরিত্র মৃত্যুঞ্জয় কে উজ্জ্বল করে তোলার জন্য নিখিল নামে একটি বাস্তব বুদ্ধি সম্পন্ন চরিত্র সৃষ্টি করেছেন। প্রখর বুদ্ধি মান এই রোগা যুবকটি কিছুটা অলস প্রকৃতির দুই সন্তানের পিতা নিখিলের সংসারের প্রতি তেমন কোনো টান ছিল না, সে অবসর সময়ে বই পড়ে সময় কাটাতে ভালোবাসতো।


অন্যদিকে সমপদস্থ কর্মী হলেও নিখিলের থেকে মৃত্যুঞ্জয়ী 50 টাকা বেশি মাইনে পেতেন। দুই বন্ধুর মধ্যে একটু অবজ্ঞা মিশ্রিত ভালোবাসা জড়িয়ে ছিল, তবে মৃত্যুঞ্জয়ের মানসিক শক্তির কাছে নিখিল কিছুটা নিস্তেজ ছিল। এই কারণে নিখিল আফসোস করে বলতো যে – সে যদি মৃত্যুঞ্জয় হতো তাহলে মন্দ হত না।


নিখিল চরিত্র একটু অন্যধরনের হলেও মৃত্যুঞ্জয় চরিত্রটিকে সবার উপরে তুলে দিয়েছে। মৃত্যুঞ্জয় কে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে নিখিল যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন। এমনকি মৃত্যুঞ্জয়ের অফিসে ছুটির ব্যবস্থা পর্যন্ত করে দিয়েছে নিখিল।


মৃত্যুঞ্জয়ের মত নিখিল ও দুর্ভিক্ষ দেখে কাতর হয়েছে, কিন্তু সে তার মত ভেঙে পড়েনি বরং সে মৃত্যুঞ্জয় কে বোঝাতে চেয়েছে, – পাশবিক স্বার্থপরতা এর মধ্য দিয়ে মানুষ বেঁচে থাকতে পারেনা। মৃত্যুঞ্জয়ের পরিবারের প্রতি তার আন্তরিক ভালোবাসা ও কম ছিলনা, কেননা মৃত্যুঞ্জয় বাড়ির বাইরে চলে গেলে নিখিল সবসময় তাদের পাশে থেকেছে। তাই গল্পটির মধ্যে নিখিল শুধুমাত্র একটি চরিত্র নয় তা হৃদয়বান ও বাস্তব চরিত্র।


14.  মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'কে বাঁচায়, কে বাঁচে' ছোটোগল্পের কাহিনিটি সংক্ষেপে লেখো ।


মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'কে বাঁচায়, কে বাঁচে' ছোটোগল্পটি কলকাতার এক চাকুরিজীবী সংসারী যুবক মৃত্যুঞ্জয়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। পঞ্চাশের (১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের) মন্বন্তরকালে একদিন অফিস যাওয়ার পথে ফুটপাথে মৃত্যুঞ্জয় অনাহার-মৃত্যুর এক বীভৎস দৃশ্য দেখে ফেলে। এই দৃশ্য দেখে সে এতটাই আঘাত পায় যে, এরপর থেকে ভিতরে-বাইরে পালটে যেতে শুরু করে সে।


   অপরাধবোধে দীর্ণ মৃত্যুঞ্জয় ভালো করে খেতে ঘুমোতে পর্যন্ত পারে না। সে ও তার স্ত্রী একবেলা না খেয়ে সে খাবার অনাহারীদের মধ্যে বিলিয়ে দিতে শুরু করে। এমনকি, মাইনের দিন পুরো মাইনেটা মৃত্যুঞ্জয় তার সহকর্মী-কধু নিখিলের মাধ্যমে ত্রাণ তহবিলে দান করে দেয়। অনেক চেষ্টা করেও নিখিল তাকে নিরস্ত করতে ব্যর্থ হয়। এরপর থেকে অফিস এবং সংসারের কথা ভুলে গিয়ে সে দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষদের পর্যবেক্ষা করতে কলকাতা শহর চষে বেড়াতে থাকে। তাদের সঙ্গে কথাও বলে মৃত্যুঞ্জয়।


   এরপর ক্রমে ক্রমে অফিসে, তারপর একসময় বাড়িতে যাওয়াও কধ করে দেয় সে। শেষপর্যন্ত মৃত্যুঞ্জয় ছেঁড়া কাপড়ে, খালি গায়ে, মগ হাতে লঙ্গরখানায় গিয়ে কাড়াকাড়ি করে খিচুড়ি খায় এবং বাকি সময় ফুটপাথে পড়ে থেকে অনাহারক্লিষ্ট সঙ্গীদের মতোই একঘেয়ে সুরে বলতে থাকে, “গাঁ থেকে এইছি। খেতে পাইনে বাবা। আমায় খেতে দাও!” এভাবেই মধ্যবিত্ত যুবক মৃত্যুঞ্জয় তার পরিবার, পেশা ও সমাজকে ত্যাগ করে অনাহারী সর্বহারাদের ভিড়ে মিশে যায়।



কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন উত্তর 2024 কে বাঁচায় কে বাঁচে! (গল্প) মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Ke Bachay Ke Bache Question and Answer : কে বাঁচায় কে বাঁচে! (গল্প) মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Ke Bachay Ke Bache Question and Answer নিচে দেওয়া হলো। এই দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – WBCHSE Class 12 Bengali Ke Bachay Ke Bache Question and Answer, Suggestion, Notes – কে বাঁচায় কে বাঁচে! (গল্প) মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে বহুবিকল্পভিত্তিক, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রোচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (MCQ, Very Short, Short, Descriptive Question and Answer) গুলি আগামী West Bengal Class 12th Twelve XII Bengali Examination – পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক বাংলা পরীক্ষার জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট। তোমরা যারা কে বাঁচায় কে বাঁচে! (গল্প) মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় – উচ্চমাধ্যমিক বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | HS Bengali Ke Bachay Ke Bache Question and Answer খুঁজে চলেছ, তারা নিচে দেওয়া প্রশ্ন ও উত্তর গুলো ভালো করে পড়তে পারো। কে বাঁচায় কে বাঁচে! (গল্প) মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় – উচ্চমাধ্যমিক দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর | West Bengal HS Class 12th Bengali Ke Bachay Ke Bache Question and Answer কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন উত্তর 2024

  কে বাঁচায় কে বাঁচে, কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন উত্তর 2024, কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন উত্তর, কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের প্রশ্ন উত্তর, কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের বিষয়বস্তু, কে বাঁচায় কে বাঁচে প্রশ্ন উত্তর, hs bengali কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন উত্তর 2023, কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পের প্রশ্ন উত্তর, কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্প, কে বাঁচায় কে বাঁচে mcq, কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্প প্রশ্ন উত্তর, কে বাঁচায় কে বাঁচে, কে বাঁচায় কে বাঁচে প্রশ্ন ও উত্তর,  hs bengali কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন উত্তর 2024 কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন উত্তর 2024  কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন উত্তর 2024 


কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন উত্তর 2024 কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন উত্তর 2024 কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন উত্তর 2024 কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন উত্তর 2024 কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন উত্তর 2024 কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন উত্তর 2024 কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন উত্তর 2024 কে বাঁচায় কে বাঁচে বড় প্রশ্ন উত্তর 2024