সুপরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের মধ্যে আলোচনা করো

  দ্বাদশ শ্রেণীর রাষ্ট্রবিজ্ঞান থেকে যে সকল প্রশ্ন গুলি পরীক্ষাতে আসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সেই সকল প্রশ্ন গুলির উত্তর এখানে যথা যথ ভাবে আলোচনা করা হলো। এখানে আমরা পর পর উত্তর গুলিকে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। এখানে সুপরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের মধ্যে আলোচনা করো, এই প্রশ্নটির উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।


সুপরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান

    সুপরিবর্তনীয় সংবিধান হলো সেই সংবিধান যে সংবিধানকে সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতিতে সংশোধন করা যায়। কিন্তু, যে সংবিধান সংশোধন করার জন্য বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন এর প্রয়োজন হয়, সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতিতে সংশোধন করা যায় না সেই সংবিধানকে দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান বলে

সুপরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান


পার্থক্য :- সুপরিবর্তনীয় ও দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের মধ্যে যে সমস্ত পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় সেগুলি হল যথা —

(১) সংশোধন পদ্ধতির ক্ষেত্রে পার্থক্য :- সুপরিবর্তনীয় সংবিধানকে সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতিতে সংশোধন করা যায়।

          অন্যদিকে, দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানকে সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতিতে   সংশোধন করা যায় না এই জন্য বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়।


(২) মর্যাদাগত পার্থক্য :- সুপরিবর্তনীয় সংবিধান নমনীয় বলে সাধারণ আইন এর তুলনায় সাংবিধানিক আইনের বিশেষ কোনো মর্যাদা থাকে না।

          অন্যদিকে, দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান কে সাধারণ আইন পাসের পদ্ধতিতে সংশোধন করা যায় না বলে সাংবিধানিক আইনের বিশেষ মর্যাদা থাকে।


(৩) উৎসগত পার্থক্য :-  সুপরিবর্তনীয় সংবিধান সংবিধান সভা বা কনভেনশন দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে রচিত না হয়ে প্রথা, রীতিনীতি, আইনসভা প্রণীত আইন ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠতে পারে।

        অন্যদিকে, দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান সংবিধান সভা বা কনভেনশন দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে রচিত হয়।


(৪) বিধিবদ্ধতার প্রশ্নে পার্থক্য :-  সুপরিবর্তনীয় সংবিধান লিখিত বা অলিখিত দুই হতে পারে। যেমন — ব্রিটেনের সংবিধান অলিখিত এবং নিউজিল্যান্ডের সংবিধান লিখিত।

         অন্যদিকে, দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান লিখিত হতেই হবে।


(৫) নাগরিক অধিকার রক্ষার প্রশ্নে পার্থক্য :-  সুপরিবর্তনীয় সংবিধানকে ইচ্ছামত সংশোধনের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ নাগরিক অধিকারের উপর সহজেই হস্তক্ষেপ করতে পারে।

          অন্যদিকে, দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানে এই সুযোগ না থাকায় নাগরিক অধিকার সুরক্ষিত থাকে।


(৬) স্পষ্টতার ক্ষেত্রে পার্থক্য :-  সুপরিবর্তনীয় সংবিধান অলিখিত বলে অস্পষ্ট হয়।

           অন্যদিকে, দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান লিখিত বলে স্পষ্ট হয়।


(৭) গতিশীলতার ক্ষেত্রে পার্থক্য :-  সুপরিবর্তনীয় সংবিধান নমনীয় বলে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে সহজেই তাল মিলিয়ে চলতে পারে।

           অন্যদিকে, দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধান অনমনীয় বলে অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।


   উপরিউক্ত বিষয় গুলির মধ্যে সুপরিবর্তনীয় দুষ্পরিবর্তনীয় সংবিধানের পার্থক্য নিহিত আছে।


Political Science Question & Answere