ভাষাবিজ্ঞান কি ? ভাষাবিজ্ঞানের স্বরূপ আলোচনা করো।

   ভাষাবিজ্ঞানের গবেষণার ধারায় ভাষা জিজ্ঞাসা কে অনেক বিস্তৃতভাবে আলোচনা করা হয়ে থাকে। কারণ সাধারণভাবে আমরা ভাষাকে বাঁধতে গেলে শব্দবিদ্যা বা ব্যাকরণ এর সাহায্য নিয়ে থাকি। কিন্তু এই ব্যাকরণের বিস্তৃত, বিজ্ঞানসম্মত ভাষা বিশ্লেষণটি হলো ভাষাবিজ্ঞানভাষাবিজ্ঞান এর ধারা তে কতগুলি প্রতিশব্দ ব্যবহৃত হয় যেমন - Philology, Linguistics ইত্যাদি এদের মধ্যে আমরা লিঙ্গুইস্টিকস কে বিশুদ্ধ ভাষাতত্ত্ব ভাষাবিজ্ঞান বলে ধরে নেব।

    

    মূলত ভাষাবিজ্ঞানের কাজ হল প্রয়োজন অনুসারে লেখ্য ভাষার থেকে নানান তথ্য সংগ্রহ করে পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি সাধারণ সিদ্ধান্তে আসা এবং সেই সাধারণ সিদ্ধান্ত থেকে একটি বিশেষ সূত্র কে প্রণয়ন করা। 


ভাষাবিজ্ঞানের স্বরূপ

     আমরা ভাষাবিজ্ঞান বলতে যা বুঝি তা হল মানুষের উচ্চারিত ভাষা নিয়ে বিভিন্ন চিন্তা ভাবনা ও তার গবেষণা। মানুষের উচ্চারিত মুখের ভাষাকে যখন বিজ্ঞানসম্মত উপায় চর্চা করা হয় তখন তা হয়ে ওঠে প্রকৃত ভাষাবিজ্ঞান


   অর্থাৎ মুখের ভাষাকে পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে আসা হলো ভাষাবিজ্ঞানের কাজ। ভাষাবিজ্ঞানের এই প্রণালীটি বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার মত বিশেষ থেকে সাধারণের দিকে নির্বাচন করে এই কারণে বর্তমানে ভাষাবিজ্ঞান কে পুরোপুরি বিজ্ঞানের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে ।

ভাষাবিজ্ঞানের স্বরূপ আলোচনা করো।
ভাষাবিজ্ঞান

   এই কারণে ভাষাবিজ্ঞান বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার মত নিত্য প্রগতিশীল এবং সক্রিয়। বিজ্ঞান যেমন নিত্য নতুন তথ্য আবিষ্কারের মাধ্যমে ধীরে ধীরে নতুন তথ্যের আলোকে পুরনো সিদ্ধান্ত পুরনো নিয়মের সংশোধন ও পরিমার্জন করে একই রকমভাবে ভাষাবিজ্ঞানও এগিয়ে চলেছে।


    ভাষাবিজ্ঞান যেহেতু বিশেষ থেকে সাধারণের দিকে যাত্রা করে তাই এটি আরোহ মূলক নীতিতে গঠিত। ভাষাবিজ্ঞান ভাষার যে সকল উপাদান নিয়ে বিশ্লেষণ ও নীতি নির্ধারণ করে সেগুলো মূলত তিনটি - ধ্বনিতত্ত্ব, রুপতত্ত্ব ও বাক্যতত্ত্ব


    এই ভাষাবিজ্ঞানের পথ চলা প্রাচীনকালের মানুষের মন থেকেই শুরু হয়েছিল, তবে এর বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চিন্তাভাবনা শুরু হয় আধুনিককালে। প্রাচীন ভারতের পাণিনি, পতঞ্জলি, ভর্তৃহরি প্রমূখ ব্যক্তিবর্গ তাদের ভাষা সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি বিভিন্ন গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেছিলেন। আসলে ভাষাবিজ্ঞান বা ভাষা-বিশ্লেষণের সুক্ষ সুক্ষ শব্দগুলি তখন ব্যবহার হতো না এই কারণে ভাষা সম্পর্কিত কোন বিশেষ আলোচনাকেই ব্যাকরণ বলে জানা যায়।