পালামৌ গ্রন্থে লেখক এর যাত্রাপথের বর্ণনার পরিচয় দাও।
পালামৌ সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের একটি উল্লেখযোগ্য ভ্রমণ সাহিত্য। একদা পালন পরগনার নাম শুনে সঞ্জীবচন্দ্র তাকে সাহেব সমাকীর্ণ একটি স্থান বলে মনে মনে আবিষ্কার করেছিলেন কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর জন্য তিনি যেভাবে আয়োজন সমাহারে উপস্থিত হয়েছেন তাতে তার বর্ণনারীতির গুণ আরো বেশি ধরা পড়েছে।
পালামৌ গ্রন্থে লেখক এর যাত্রাপথের বর্ণনার পরিচয় দাও।
একদা ডাক হরকরা নামক পত্রিকায় পালামৌ পরগনা থেকে প্রকাশিত হতো এ কথা লেখক শুনেছিলেন তখন থেকেই তিনি অনুমান করেছিলেন এই পালামৌ স্থানটি মনে হয় শহরের মতনই বৃহৎ এই উদ্দেশ্যে তিনি সেখানে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন এবং এই যাত্রাপথের পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা বৃদ্ধিত করেছেন।
রাঁচি থেকে লেখক পালামৌ এর জন্য যাত্রা শুরু করেছিলেন রাঁচি থেকে পালকি আরোহন করলে বাহগণের অনুরোধে তিনি দূর থেকে পালামৌ পরগনার বাহ্যিক পাহাড়ি পরিবেশ দেখতে পেয়েছিলেন।। এই পাহাড়ি পরিবেশ দেখে লেখক মনে করেছিলেন যেন মর্ত্যে মেঘ করেছে। লেখক সেখানে দাঁড়িয়ে দূর থেকে পালাময়ের সেই মনোহর দৃশ্য দেখতে লাগলো।।
দূরে সেই দৃশ্য লেখকের মনকে এতই আলোকিত করে দিয়েছিল যে, তিনি ভাবতে শুরু করলেন আর কতক্ষণে সেখানে তিনি পৌঁছাবে এমনকি সেখানে পৌঁছানোর জন্য তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন।
রাঁচি থেকে চার পাচ ক্রস দূরে গিয়ে লেখক আবার দূর থেকে পালামৌ সৌন্দর্য উপলব্ধি করতে চেয়েছেন সেই কারণে তিনি পালকি থেকে নেমে আবার পালানো কল্পনাকে দেখেছেন কিন্তু দেখে তখন তার আর মেঘ বলে ভুল হলো না। কারণ ততক্ষণে পাহাড় গুলোকে স্পষ্ট বোঝা যেতে লাগলো। এইভাবে পথ চলতে চলতে আরো দুই ক্রোশ অগ্রসর হয়ে তিনি লক্ষ্য করলেন চারিদিকে তামাটে অরণ্য যেন তাকে স্বাগত জানাচ্ছে। তিনি দূর থেকে যেমন সবুজ অরণ্য দেখেছিলেন কাছে এসে সেই ভ্রান্তি ত্যাগ হল।
তিনি যাত্রা পথে পাহাড়ের গায়ে উপরে নিচে সর্বত্রই জঙ্গল দেখতে পেলেন এমন গভীর আর নিবিড় যেন তার কোথাও ফাঁকা নেই। সেই পাহাড়ি প্রান্তরে কোথাও চাষ করা জমিনেই কোন গ্রাম নেই কোন নদী নেই নেই সেখানে যাওয়ার কোন পথ শুধুমাত্র ঘন বন আর নিবিড় তার চারপাশ।
যদিও পালামৌ পরগনায় পৌঁছানোর পর এই ভ্রম লেখক এর ঘুচে গিয়েছিল। তবে লেখক যে সাল তাল তমাল হিন্তাল ইত্যাদি গাছের কথা শুনে ছিল তার কিছুই পালাবেও পৌঁছে তিনি পাননি। পথ চলতে চলতে তিনি কাষ্ঠ ঘণ্টার বিষন্ন শব্দ শুনে চমৎকৃত হয়েছিলেন পরে তিনি বুঝতে পারেন সেগুলি আসলে কতগুলি মহিষ।
যাত্রাপথে তিনি কতগুলি গো-বালক দেখে অভিভূত হয়ে গিয়েছিলেন, যাদের দেখে তিনি মনে করেছেন কতগুলি কৃষ্ণ বালক যাদের রূপ কান্তি কোন কিছুই নেই অথচ এক অজানা দুর্বোধ্য সংকেত তাদের শরীর দিয়ে বয়ে চলেছে। তারা কেউ মোষের পিঠে শুয়ে কেউবা মহিষের পিঠে নৃত্য করতে ব্যস্ত।
কোল জাতির রমণীরা অতি সরল তারা লেখকের পালকি দেখে লজ্জাবোধ না করে তার খুব কাছে এসে দাঁড়িয়ে লেখক আর তার পালকিকে নিরীক্ষণ করতে লাগলো। আর এই সকল দৃশ্য দেখেই লেখক এই কোন জাতির সম্পর্কে বলেছেন বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃ ক্রোরে।
এছাড়া বাংলা সাহিত্যের অনন্য প্রশ্নগুলি
- উপন্যাস কাকে বলে এর বৈশিষ্ট্য লেখ
- রোমান্স কাকে বলে এর বৈশিষ্ট্য লেখ
- ঐতিহাসিক উপন্যাস কাকে বলে এর বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো।
- সামাজিক উপন্যাস কাকে বলে এর বৈশিষ্ট্য লেখ।
- রাজনৈতিক উপন্যাস কাকে বলে এর বৈশিষ্ট্য লেখ।
- আঞ্চলিক উপন্যাস কাকে বলে এর বৈশিষ্ট্য লেখ।
- মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাসের সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্য লেখ।
- ছোটগল্প কাকে বলে ? এর বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন