জাতীয় শিক্ষানীতির মূল বিচার্য বিষয় গুলি আলোচনা করো। Basic feature of national education policy.

     ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী সর্বপ্রথম জাতির উদ্দেশ্যে শিক্ষার অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মত 1986 সালের একুশে এপ্রিল 12 টি অধ্যায়ে বিভক্ত ভারতীয় শিক্ষানীতির খসড়া প্রকাশিত হয়। এই প্রস্তাবিত শিক্ষানীতি সংশোধিত আকারে পার্লামেন্টে গৃহীত হয় যা ন্যাশনাল পলিসি অফ এডুকেশন জাতীয় শিক্ষানীতি নামে পরিচিত।
জাতীয় শিক্ষানীতির মূল বিচার্য বিষয় গুলি আলোচনা করো। Basic feature of national education policy.

      ভারতীয় জাতীয় শিক্ষানীতিতে ভারতবর্ষের শিক্ষা ক সময় উপযোগী করে তোলার জন্য অনেকগুলি পরিকল্পনা করা হয়, মনে করা হয়েছিল এই বিষয়গুলি এন পি ই এর মেরুদন্ড কে শক্ত করবে। সেই কারণে জাতীয় শিক্ষানীতির তালিকাতে কয়েকটি মূল বিচার্য বিষয় কে রাখা হয়েছিল সেগুলি সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো - 


শিক্ষক :  শিক্ষা ক্ত্রে শিক্ষক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সেই কারণে কমিশন শিক্ষকদের জন্য কিছু নির্দিষ্ট নীতি প্রদান এবং শিক্ষকতাকে একটি বৃত্তিমূলক পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছে। সাথী সাথী শিক্ষককে সামাজিক অগ্রগতির ধারক হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

প্রাথমিক শিক্ষা :   প্রাথমিক শিক্ষার সুপারিশে বলা হয় 14 বছর বয়স পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করতে হবেএবং যারা পাস করতে পারবে না তাদের জন্য অনুন্নয়ন প্রথা বাতিল করতে হবে। আমাদের প্রাথমিক শিক্ষা পিছিয়ে থাকার কারণে তাকে তুলে ধরে প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঠন পাঠন উপযোগী করে তুলতে হবে।

মাধ্যমিক শিক্ষা :   জাতীয় শিক্ষানীতি গঠিত হওয়ার অনেক আগেই মাধ্যমিক শিক্ষা নিয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছিল। কিন্তু কিছু কিছু ত্রুটির কারণে এই শিক্ষানীতিকে আবার মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পর্কে আলোচনা করতে হয়। জাতীয় শিক্ষানীতিতে বলা হয় মাধ্যমিক শিক্ষার কাঠামো কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ উভয়ে সমান সুযোগ নিতে পারবে। মাধ্যমিক শিক্ষার বিষয় হবে বিজ্ঞান গণিত এবং আঞ্চলিক ভাষা।

বৃত্তিমুখী শিক্ষা :   জাতীয় শিক্ষানীতির মূল বিচার্য বিষয় গুলির মধ্যে বৃত্তিমুখী শিক্ষা কে গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল। এখানে বলা হয় সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বৃত্তিমূলক শিক্ষা কে অগ্রগতি দিতে হবে। কৃষি ও শিল্প প্রকৃতির উপর গুরুত্বারোপ করে এই বৃত্তিমূলক শিক্ষা কে সফল করে তুলতে হবে।

বিজ্ঞান শিক্ষা :   বৃত্তিমূলক দক্ষতার ক্ষেত্র তৈরি করার জন্য জাতীয় শিক্ষানীতিতে বিজ্ঞান শিক্ষাকে মূল বিচার্য বিষয় হিসেবে রাখা হয়েছে। এই বিষয়ে বলা হয়েছে দশম শ্রেণী পর্যন্ত বিজ্ঞানে ও অংক শাস্ত্রে আবশ্যিক পাঠ গ্রহণ করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানচেতনা এর বিকাশ ঘটাতে হবে।

প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা :   ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থায় প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাবর কোন না কোন সাহায্যের কথা বলা হয় কিন্তু জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে কমিশনের মত বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থী দের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।

গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় :   বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের গমীণ বিশ্ববিদ্যালয় কথা বলা হলেও যথাযথভাবে তার বিস্তার ঘটেনি। সেই কারণে জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর অনুসরণে 1986 সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে আবারো গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার কথা বলা হয়।

নবোদয় বিদ্যালয় :   সমস্ত ভারতবর্ষের প্রতিভাবান শিক্ষার্থীদের যথাযথভাবে জ্ঞানের বিকাশ লাভের জন্য জাতীয় শিক্ষানীতিতে এক ধরনের বিদ্যালয় স্থাপনের কথা বলা হয়ে থাকে পরে যাকে নবোদয় বিদ্যালয় নাম দেওয়া হয়। এই বিদ্যালয়ে গুলি আবাসিক এবং শিক্ষার্থীদের মেধার ভিত্তিতে সুযোগ দানের ব্যবস্থা করা হয়।

অর্থনীতি :   ভারতীয় শিক্ষার অগ্রগতির প্রধান অন্তরায় বাঁধা হলো অর্থনীতি। জাতীয় শিক্ষানীতিতে শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে অর্থনীতিকে খানিকটা বাদ দেওয়া হয়। শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে জাতীয় অর্থনীতি বিরোধী না হয়ে ওঠে কমিশন সেইমতো প্রকাশ করেছে।


      জাতীয় শিক্ষানীতি কর্তৃক প্রকাশিত মূল বিচার্য বিষয় গুলির মধ্যে উপরের এই কদিনে আলোচনা করা হলো। কারণ পরীক্ষাতে প্রশ্নটিই আসলে খুব বেশি হলে 8 মার্কের মত আসতে পারে সেই ক্ষেত্রে ভর্তি পয়েন্ট লিস্ট ছাড়াও অনেক পয়েন্ট আছে যেগুলি নিয়ে আলোচনার কোনো প্রয়োজন নেই।

  

অন্যান্য আরো সকল শিক্ষা বিজ্ঞানের প্রশ্ন :