সক্রিয় অনুবর্তন কি এর বৈশিষ্ট্য লেখ পরীক্ষাটি বর্ণনা করো শিক্ষা ক্ষেত্রে গুরুত্ব আলোচনা করো।

কিছু কিছু মনোবিদ প্যাভলভের অনুবর্তন কে সংকীর্ণ বলে মতামত প্রকাশ করেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিএফ স্কিনার, তিনি মত প্রকাশ করেন যে শিক্ষার্থীরা তাদের নিজস্ব প্রবণতা প্রেষণা চাহিদা অনুযায়ী অনুবর্তন করে থাকে। অর্থাৎ তার মতে প্রাণী নিজের স্বকীয়তার মাধ্যমে ও নিজের প্রয়োজনের জন্য যখন অনুবর্তন ক্রিয়া ঘটায় তাই হল সক্রিয় অনুবর্তন। সক্রিয় অনুবর্তন এর কিছু নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য আছে - 

সক্রিয় অনুবর্তন কি এর বৈশিষ্ট্য লেখ পরীক্ষাটি বর্ণনা করো শিক্ষা ক্ষেত্রে গুরুত্ব আলোচনা করো।


1. অপারেন্ট অনুবর্তন এর ক্ষেত্রে প্রাণীর প্রাথমিক প্রস্তুতি প্রয়োজনীয়। কারণ প্রাথমিক আচরণগুলোর অনুযায়ী প্রাণীর অনুশীলনে অপারেন্ট আচরণ সৃষ্টি হয়।

2. অপারেন্ট অনুবর্তন একপ্রকার শক্তিদায়ক সত্তা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে এটি তিন প্রকার ধনাত্মক ঋণাত্মক ও শাস্তি মূলক।

3. অপারেন্ট অনুবর্তন এই যদি শক্তিদায়ক সত্তা উদ্দীপক দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হয় তবে প্রাণীর আচরণ ও দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হয়ে যায়।

4. অপারেন্ট অনুবর্তন এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নতুন আচরণ সম্পাদন করতে পারে। কারণ এই অনুবর্তন এর মাধ্যমে সক্রিয়তা প্রেষণা ইত্যাদি মানসিক প্রক্রিয়া শক্তিদায়ক তার জন্ম দেয়।

5. অপারেন্ট অনুবর্তন এর ক্ষেত্রে প্রাণীর সক্রিয়তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রাণী সক্রিয় না হলে অপারেন্ট অনুবর্তন কার্যকরী হতে পারে না।



সক্রিয় অনুবর্তন এর পরীক্ষা

     মনোবিদ বিএফ স্কিনার তাঁর সক্রিয় অনুবর্তন পরীক্ষা করার জন্য একটি বিশেষ ধরনের বক্স তৈরি করেন। যার মধ্যে থাকা প্রাণীর গতিবিধি বাইরে থেকে ভালোভাবে তিনি লক্ষ্য করতে পারেন। ওই বক্সের মধ্যে নির্দিষ্ট স্থানে একটি লিভার থাকে যেখানে চাপ দিলে সঙ্গে সঙ্গে ট্রেনের সামনে একটি খাবারের ট্রে চলে আসে। তাঁর সক্রিয় অনুবর্তন এর পরীক্ষাটি কে কয়েকটি স্তরে ভাগ করা যায় - 

       প্রথম পর্যায়ে তিনি বক্সের মধ্যে থাকা লিভারে কোনরকম স্পর্শ না করে সরাসরি প্রাণীর সঙ্গে খাবারের সম্পর্ক করিয়ে দেন। অর্থাৎ প্রাথমিক পর্যায়ে প্রাণীকে সক্রিয় করে তার সঙ্গে তার খাবারে সম্পর্ক স্থাপন করে দেয়া হয়।

     পরবর্তী পর্যায়ে তিনি বক্সের মধ্যে থাকা লিভারে চাপ দিয়ে প্রাণীর সামনে খাবারের ট্রে এনে দেয় ও বিশেষভাবে সেই ইঁদুরটিকে তিনি খাবারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।

      তৃতীয় পর্যায়ে স্কিনার ওই ক্ষুধার্ত ইঁদুরটিকে বক্সের মধ্যে ঢুকিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে থাকেন খাবার না পেয়ে ঈদুর টি নানা রকম প্রতিক্রিয়া মূলক আচরণ করতে থাকে এবং একসময় বক্সের মধ্যে থাকা লিভারে চাপ পড়ে যায় ও তার সামনে খাবারের ট্রেনটি চলে আসে ওই ইদুর টি খাদ্য গ্রহণ করে। 

     পরে বিজ্ঞানী আরো কয়েকবার ঘটনাটির পুনরাবৃত্তি ঘটান এবং লক্ষ্য করেন প্রথম পর্যায় থেকে পরবর্তী পর্যায়ে গুলিতে অনেক কম সময়ে এটি খুব সহজেই লিভারের চাপ দিয়ে ট্রেতে খাবার আনতে সক্ষম হয়। ধীরে ধীরে সক্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় ইঁদুরটি সরাসরি লিভারে চাপ দিয়ে বেঁধে খাবার নিয়ে আসছে অর্থাৎ ইঁদুরটি তার স্বক্রিয়তা চাহিদা প্রভৃতির দ্বারা চালিত হয়ে শিখন কৌশল আয়ত্ত করে ফেলেছে।



শিক্ষাক্ষেত্রে সক্রিয় অনুবর্তনের গুরুত্ব

1. শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাণীর সক্রিয়তা একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যার মাধ্যমে তিনি নিজেই শিক্ষার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত হতে পারে। অপারেন্ট বা সক্রিয় অনুবর্তনের ক্ষেত্রে প্রাণীকে সরাসরি শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত করা যায়।

2. সক্রিয় অনুবর্তন এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের চাহিদা প্রেষণা ইত্যাদি বুঝে শিক্ষাদান করা যায় সুতরাং শিক্ষাক্ষেত্রে সক্রিয় অনুবর্তন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

3. সক্রিয় অনুবর্তন এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষণীয় বিষয়টিকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত করে শিক্ষাদান পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়।

4. শিক্ষার অন্যতম প্রধান বিষয় অবাঞ্চিত বিষয়গুলোকে এড়িয়ে চলা। সক্রিয় অনুবর্তন এর মাধ্যমে খুব সহজেই বানান ভুল বা অবাঞ্চিত বিষয়গুলিকে আচরণের মাধ্যমে পরিবর্তন করা যায়।




***** দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষা বিজ্ঞানের সকল বিষয়ের নোট ও শর্ট প্রশ্নের উত্তর পেতে এখানে ক্লিক করো -- Education Note