দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের শ্রেণীবিভাগ করো। দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের শিক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করো।

    দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থী কথাটি মনে আসলেই আগে বুঝতে হয় দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থী কারা। সমাজ বিদ্যালয়ে যে সমস্ত শিশু শিক্ষার্থী অন্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের থেকে সম্পূর্ণ বা আংশিক দৃষ্টিহীন তাদের কে দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী বলা হয়ে থাকে।
দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের শ্রেণীবিভাগ করো। দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের শিক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করো।

    স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে যার মধ্য দিয়ে দৃষ্টি হীন  প্রতিবন্ধীদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয় - 


দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের শ্রেণীবিভাগ


       বিখ্যাত মনোবিজ্ঞান অন্ধ দৃষ্টিহীন শিশুদের চারটি শ্রেণীতে ভাগ করেছেন সেগুলো সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো - 

জন্মগতভাবে সম্পূর্ণ অন্ধত্ব :   যেসব শিশু পাঁচ বছর বয়সের আগে বা জন্মগতভাবে সম্পূর্ণভাবে দৃষ্টিহীন হয়ে পড়ে তাদের অন্তত কে বলা হয় জন্মগতভাবে সম্পূর্ণ অন্ধত্ব।

জন্মগতভাবে আংশিক অন্ধত্ব :   জন্মগতভাবে যেসব শিশু আংশিক অন্ধ তাদেরকে অন্ধত্ব কে জন্মগতভাবে আংশিক অন্ধত্ব বলা হয়।

অর্জিত অন্ধত্ব :   যেসব শিশু 5 বছরের পর কোনো না কোনো কারণে সম্পূর্ণ দৃষ্টি হারিয়ে ফেলে বা ফেলেছে তাদের এই অন্ধত্বকে বলে অর্জিত অন্ধত্ব।

অর্জিত আংশিক অন্ধত্ব :   যেসব শিশু জন্মগতভাবেই স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তির সম্পন্ন ছিল কিন্তু পরবর্তী পর্যায়ে আংশিকভাবে অন্ধ হয়েছে তাদের অন্ধত্বকে বলা হয় অর্জিত আংশিক অন্ধত্ব।


দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের শিক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা


       বিভিন্ন মনোবিজ্ঞান দৃষ্টিহীনদের চাহিদা মানসিক বৈশিষ্ট্য ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে তাদের জন্য নির্দিষ্ট কয়েকটি শিক্ষা পদ্ধতি গড়ে তুলেছে। সেই সমস্ত শিক্ষা পদ্ধতির কয়েকটি সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো - 

ব্রেইল পদ্ধতি :  ফ্রান্সের অধিবাসী লুইস ব্রেইল 1829 সালে ব্রেইল পদ্ধতি আবিষ্কার করেন।তার এই আবিষরের সাথে সাথে সমস্ত বিশ্বে অন্ধ বা দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার নতুন সুযোগ আসে। এই পদ্ধতিটি ছিল পুরোপুরি স্পর্শ ভিত্তিক। 1950 সালে ব্রেইল পদ্ধতি কে ভাষা দান করা হয়। এই পদ্ধতিতে ছটি ডট এর মাধ্যমে ভাষাকে বোঝানো হতো। 

      সমস্ত বিষয় দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা দরজা খুলে দেয় এই ব্রেইল পদ্ধতি। গ্রিলের বড় আকারের হওয়ার জন্য সহজেই শিক্ষার্থীরা তাদের স্পর্শ করে অনুভব এর মাধ্যমে বুঝতে পারে। স্পর্শের মাধ্যমে পর্যায়ে বলে এই পদ্ধতিটি অনেকটা সুবিধাজনক। স্টাইলাস নামক কলমের মাধ্যমে ব্রেইল লেখা হয়। ব্রেইল সাধারণত বাম থেকে ডান দিকে পড়তে হয়।


ওষ্ঠ পঠন পদ্ধতি :  অন্ধ শিক্ষার্থীরা যাতে কোন বক্তার ঠোটে হাত দিয়ে বুঝতে পারে সেই জন্য এই পদ্ধতির ব্যবস্থা করা হয়। এই পদ্ধতিতে কোন অন্ধ শিক্ষার্থী অন্য শিক্ষার্থীর ঠোটে হাত দিয়ে অনুভব করে বুঝতে পারে।

টেপ রেকর্ডার পদ্ধতি :   শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য আধুনিক শিক্ষা পদ্ধতিতে টেপ রেকর্ডার পদ্ধতি আবিষ্কার করা হয়। এই টেপ রেকর্ডার পদ্ধতির জন্য অনেক অন্ধর শিক্ষার্থী আজ আধুনিক শিক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পেরেছে। এই পদ্ধতিতে কোন শিক্ষার্থী শিক্ষক এর কোন পার্কে রেকর্ড করে এবং পরবর্তী সময়ে ওই পার চালিয়ে পাঠ কে মুখস্ত করে।