অধঃক্ষেপণ বলতে কী বোঝো | অধঃক্ষেপণ সৃষ্টির কারণ | অধঃক্ষেপনের কারণ কি | বিভিন্ন প্রকার অধঃক্ষেপনের সম্পর্কে আলোচনা করো।
বারিমন্ডল অধ্যায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা হলো অধঃক্ষেপণ অধঃক্ষেপণ বলতে সাধারণত বোঝায় যে কোনো বস্তু পৃথিবীর দিকে ছুটে আসা, আর্ এই ধারণা থেকেই বৃষ্টি ও তুষার পাতের মতো ঘটনা গুলিকে আমরা অধঃক্ষেপণ বলে জেনে থাকি। এখানে অধঃক্ষেপণ কি, অধঃক্ষেপণ সৃষ্টির কারণ এবং বিভিন্ন প্রকার অধঃক্ষেপণ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো ।
অধঃক্ষেপণ বলতে কী বোঝো?
অধঃক্ষেপণ বলতে ভূপৃষ্ঠে পতিত সকল প্রকার বৃষ্টিপাত অর্থাৎ বারিপাত এবং তুষারপাতকে বোঝায়। যেমন বৃষ্টিপাত, শিলাবৃষ্টি, তুষারপাত ইত্যাদি।
![]() |
অধঃক্ষেপণ |
ঘনীভবন বা উর্ধ্বপাতন অর্থাৎ অভয় যৌথ প্রক্রিয়ার ফলে গঠিত পারে এই প্রক্রিয়া যদিও বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প কুয়াশা তুষার তুহিনে পরিণত করে কিন্তু এরা অধঃক্ষেপনের অন্তর্ভুক্ত নয় কেবলমাত্র বৃষ্টিপাত এবং তুষারপাত এই পর্যায়ভুক্ত।
অধঃক্ষেপণ সৃষ্টির কারণ
ঊর্ধ্বগামীবায়ু ঘনীভূত হইলে যে সর্বদায় অধঃক্ষেপণ হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। কৃত্রিম বৃষ্টিপাত যে প্রক্রিয়াতে হয় তাহার সকল তত্তও ()। কৃত্তিম বৃষ্টিপাত ঘটাইবার জন্য যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় তা থেকে জানা যায় মেঘে সাধারণত অসংখ্য জলকনা, তুষারকনা বা অন্যান্য দ্রব্য থাকে।
ক্ষুদ্র জলকণাগুলো একে অপরের সঙ্গে মিশে গিয়ে বড় বড় জলকণায় পরিণত হয়। এই বড় বড় জলকণা গুলো পরস্পরের সহিত ঘর্ষনে বিপরীত তড়িৎ আধানের সৃষ্টি করে, এবং একে অপরের আকর্ষণে পরস্পর মিলিত হয়ে বৃহৎ ও ভারী জলকণায় পরিণত হয়। পরে পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ শক্তির ফলে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়।
বৃষ্টি ফোটা বা জলকণার আয়তন বৃদ্ধিপায় দুটো পদ্ধতিতে :-
i) বৃষ্টিফোটার সম্মুখভাগে বাতাসের উপস্থিতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বৃষ্টিফোটার সঙ্গে মিশে যায় এবং বৃষ্টির ফোটার আয়তন বৃদ্ধি করে। ইহাকে Direct Capture বলে।
ii) কোন বড় ভরের জলকণা দ্রুত নিম্নগামী হওয়ার ফলে উহার পশ্চাত ভাগে ক্ষণিক শূণ্যস্থানের সৃষ্টি হয়। ফলে মূলকণার উপরিস্থিতি ক্ষুদ্র জলকনা বৃষ্টি ফোঁটার উপরিভাগ পতিত হয় এবং ফোঁটার আয়তন বৃদ্ধি করে ইহাকে wave Capture বলে। এই সমগ্র পদ্ধতিকে কালিয়ান (Callisions) পদ্ধতি বলে।
উদ্ধাকাশে মেঘ অতি শীতল জলকনা থাকিলে অধঃক্ষেপনের প্রত্যক্ষ অংশ নেয়না। অতি শীতল মেঘে বরফের কনা আসিয়া পড়িল জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হইয়া স্ফটিকারে পরিণত হয়। বৃহৎ আকারে পতিত স্ফটিক গুলো শীতল বায়ুর মধ্যে দিয়া পতিত হলে তুষার রূপে ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়।
কিন্তু তা উষ্ণ বায়ুর মধ্যে দিয়ে পতিত বৃষ্টি রূপে পতিত হয়। এর দ্বারা ক্রান্তীয় অঞ্চলের অধঃক্ষেপণকে ব্যাখ্যা করা যায় না। কারণ ক্রান্তীয় অঞ্চলের বৃষ্টিপাত ঘটিতে পারে মেঘের উষ্ণতা হিমাঙ্কের উপরে থাকে। এই সমগ্র পদ্ধতিটিকে বলা হয় আইক্রিস্টল পদ্ধতি(Ice - crystal prosses)।
অধঃক্ষেপণ দুই প্রকার
1) পতনশীল জলের আকৃতি অনুসারে।
2) অধঃক্ষেপণ প্রক্রিয়ার ভিত্তি অনুসারে।
1/a) বৃষ্টিপাত :-বৃষ্টিপাত বলিতে ট্রপোস্ফিয়ার থেকে ফোঁটার আকারে ভূপৃষ্ঠে জলের পতন বা বারিপাতকে বোঝায়। বৃষ্টিপাত বিভিন্ন প্রকার অধঃক্ষেপনের মধ্যে প্রধান। এই সময় বায়ুমন্ডলে নিম্নস্তরে উষ্ণতা 0°c এর উপরে থাকে।
2/b) তুষারপাত :-ট্রপোস্ফিয়ার হইতে তুষারের পতনকে তুষারপাত বলে। উদ্ধাকাশে জলীয়বাষ্প স্ফটিকে পরিণত হয় এবং সেগুলো শীতল বায়ুর মধ্যে দিয়ে তুষার রূপে পতিত হয়। ইহা কখনো কখনো গৃহ বা বৃক্ষেদির প্রচন্ড ক্ষতি সাধন করে।
3/c) শিল্ট :-অনেক সময় বৃষ্টির সহিত তুষারের প্রতনকে শিল্ট বলে।
4/d) তুহিনপাত :-(Snowfall) ভূপৃষ্ঠের নিকটস্থ জলীয়বাষ্প হিমকনা বা তুষারকনা আকারে ভূপৃষ্ঠে পতিত হলে তাকে তুহিনপাত বলে।
5/e) শিশিরপাত :-ভূপৃষ্ঠের অতিনিকটে বাষ্প ভূমি বা গাছপালার স্পর্শে শীতল হয়ে ভূমির উপর বা গাছপালার উপর জলকনা রূপে পতিত হইলে তাকে শিশিরপাত বলে।
6/f) শিলাবৃষ্টি :-প্রবল ঝড়ের ঊর্ধ্বগতির দ্বারা বৃষ্টি বা জলবিন্দু যখন অনেক ঊর্ধ্বে অতি শীতল স্থানে পৌঁছায় তখন সেই জলবিন্দু অধিক শৈত্যে জমাট বাঁধিয়া যায় এবং জলীয় বাষ্পের সহিত মিলিত হয়ে আয়তনে বৃদ্ধি পায় এবং নিন্মে পতিত হয়। এই বিশেষ রূপকে শিলাবৃষ্টি বলে।
7/g) নরম শিলাখণ্ড বর্ষণ :-নরম ও অস্বচ্ছ বায়ু মিশ্রিত তুষার সঙ্গবদ্ধ হয়ে অনেক সময় এক মিলিমিটার ব্যাসযুক্ত নরম পিন্ডের সৃষ্টি করে নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডলে শীতকালে এবং বসন্তকালে কিউমুলাস () হইতে পিন্ডের আকারে পতিত হয়।
9/h) গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি :-সমআকৃতি বিশিষ্ট অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র(0 - 0.5cm ব্যাসযুক্ত) জলকনা সামান্যতম বাতাসে মনে হয় যে বাতাসে ভাসিয়ে বেড়াইতেছে ইহাকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি বলে।
বৃষ্টিপাতের প্রকারভেদ
মেঘের প্রকৃতি, ঘনীভবনের পদ্ধতি, বায়ুমণ্ডলের অস্থিরতার প্রকৃতি ইত্যাদি ভৌতিক কারণ অনুযায়ী বৃষ্টিপাতকে নিম্নলিখিত শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়। যথা :-
1) শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত।
2) পরিচলন বৃষ্টিপাত।
3) ঘূর্ণবাত বৃষ্টিপাত।
3) ঘূর্ণবাত বৃষ্টিপাত কে আবার দুই ভাগে বিভক্ত করা যায় যথা
a) ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত বৃষ্টিপাত।
b) নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডলে ঘূর্ণবাত বৃষ্টিপাত।
b) নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডলে সৃষ্ট ঘূর্ণবাত বৃষ্টিপাতকে আবার দুভাগে বিভক্ত করা যায় যথা :-
i) শীতল সীমান্তীয় বৃষ্টিপাত।
ii) উষ্ণ সীমান্তীয় বৃষ্টিপাত।
শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত
উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ু প্রবাহ পথে উঁচু পাহাড় বা পর্বত শ্রেনীর দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত এই বায়ু দ্রুত উপরে ওঠে এবং দ্রুত ঘনীভূত হয়। এই ঘনীভবনের ফলে কিউমুলাস মেঘের সৃষ্টি হয় এবং পর্বতের প্রতিবাদ ঢালে প্রচুর বৃষ্টি দান করে একে বলে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত। পর্বত অতিক্রমের পর বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ হ্রাস পায়। এর ফলে নিন্মভীমুখীর কারণে উত্তপ্ত হয়। এইজন্য পর্বতের অনুবাদ ঢালে বৃষ্টিপাত হয়না বললেই চলে। এই অঞ্চলকে বৃষ্টিছায়া অঞ্চল বলে।
পরিচলন বৃষ্টিপাত
নিরক্ষীয় ও ক্রান্তীয় অঞ্চলে সমুদ্র সন্নিহিত এলাকায় ও সামুদ্রিক অঞ্চলে জলীয় বাষ্পের প্রাচুর্য দেখা যায়। দিনের বেলায় বা গৃষ্ম কালে অতিরিক্ত সূর্য রশ্মির তাপীয় ফলের দরুন নিম্নচাপের সৃষ্টি করে। এই অঞ্চলের স্থানীয় বায়ু দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে হালকা হয় এবং উপরে ওঠে।
ভূপৃষ্ঠে সৃষ্ট এই শূন্যস্থান পূরনের জন্য সন্নিহিত অঞ্চল থেকে উষ্ণ আদ্র বায়ু নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে ধাবিত হয় এবং উপরে ওঠে। এই পদ্ধতি অপেক্ষাকৃত ধীর।উপরে উঠার পর শিশিরাঙ্ক এর কাছাকাছি উচ্চতায় দ্রুত ঘনীভবন শুরু হয়। গভীর কিউমুলাস ও কিউমুলোনিম্বাস মেঘের সৃষ্টি করে।
পরিচলন স্রোতের প্রভাবে সৃষ্ট এই মেঘ গুলির মধ্যে অসংখ্য ছোট আবর্তন থাকে এবং বায়ুমন্ডলে ঘর্ষণের প্রভাব স্থির তড়িৎ আধান গুলি আলাদা হয়ে যায় এবং নির্দিষ্ট মাত্রা অতিক্রম করার পর বজ্রবিদ্যুৎ সংগঠিত হয়।আলো, সংঘর্ষ, উত্তাপ ও শব্দের প্রভাবে অতিদ্রুত হিমায়ন হয় এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিলাখণ্ডের ন্যায় বরফ গঠিত হয়।বড় বড় বৃষ্টি ফোটার সাথে এই বডরফ শিলা ভূপৃষ্ঠে পতিত হয়। ইহাকে শিলাবৃষ্টি বলে।
এই বৃষ্টির প্রবল্য সবচেয়ে বেশি এবং () বৃষ্টির ফলে ভূপৃষ্ঠে শীতল হয়ে যায় এবং ক্রমশ নিম্নচাপ বিনাশপ্রাপ্ত হয় ও পরিচলন বৃষ্টিপাতের শেষ ঘটে।
ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত বৃষ্টিপাত
ক্রান্তীয় অঞ্চলে উষ্ণ সামুদ্রিক অংশে গৃষ্ম কালে সূর্য তাপের প্রভাবে কখনো কখনো গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি হয়। যার বায়ু চাপের মাত্রা 970 মিলিবার নিচে নেমে যায়। এই তীব্র নিম্নচাপ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ুকে প্রবল বেগে আকর্ষণ করে ও বায়ু প্রবাহের নিয়ম অনুযায়ী কেন্দ্রের চতুর্দিকে উত্তর গোলার্ধ বামবর্তে ও দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণাবর্তে তীব্র বেগে আবর্তিত হয়।
এই আবর্তিত বায়ু ক্রমশ () নেয় গতি পথে উপরে উঠে যায় এবং পুরো সিস্টেমকে ক্রমশ স্থলভাগের দিকে প্রবল বেগে ধাবিত করে। উত্তর গোলার্ধে এর গতিপথ প্রধানত উত্তর-পশ্চিম মুখী এবং দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণ-পশ্চিম মুখী। বায়ুপ্রবাহের এই বিশেষ পদ্ধতিকে ঘূর্ণবাত বলে। এর প্রভাবে উপকূল অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়।
ঘূর্ণবাতের মাঝের বা কেন্দ্রের 5 থেকে 10 কিলোমিটার পর্যন্ত অংশে কোনরকম বায়ুপ্রবাহ হয়না একে ঘূর্ণবাতের 'চক্ষু' বা 'Eye'বলে। ঘূর্ণবাতের চোখের পর কয়েক কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে তীব্র বেগে ঝড়ের আকারে প্রবাহিত হয়। এই অংশে বায়ুর গতিবেগ প্রায় ঘন্টায় 60 - 120 কিলোমিটার।
ঝড়ের প্রভাবে এবং বজ্রবিদ্যুৎ এর প্রভাবে অতি দ্রুত হিমায়নের ফলে সৃষ্ট কিউমুলাস ও কিউমুলোনিম্বাস মেঘের সৃষ্টি হয় এবং প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটে। এই অঞ্চলকে ঘূর্ণবাতের 'দেওয়াল' বা 'Wall' বলে। প্রাচীরের পর থেকে বায়ুর গতিবেগ মেঘের পরিমাণ ঝড়ের গতিবেগ হ্রাস পায়। ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত অবশ্যই ক্রান্তীয় অঞ্চলে উষ্ণ সমুদ্র সৃষ্টি হয়ে পার্শ্ববর্তী স্থলভাগের প্রবেশ করে এবং বিনাশ করে।
নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে ঘূর্ণবাত বৃষ্টিপাত
উত্তর গোলার্ধে 40 - 50° অক্ষাংশের মধ্যে সমস্ত পৃথিবী জুড়ে বিভিন্ন আকারে কতগুলি সীমান্তের সৃষ্টি হয়। মূলত মেরু প্রদেশ থেকে আগত শীতল শুষ্ক ভারী মেরু বায়ু পুঞ্জ এবং পশ্চিম থেকে আগত উষ্ণ আর্দ্র সামুদ্রিক পশ্চিমা বায়ুর মিলনে শীতল ও উষ্ণ সীমান্তের সৃষ্টি হয়।
উষ্ণ সীমান্তের স্তরমেঘ ও শীতল সীমান্তের কিউমুলাস ও কিউমুলোনিম্বাস মেঘের সৃষ্টি হয়। এর কেন্দ্রে থাকে একটি আপেক্ষিক নিম্নচাপ। এই প্রবল ঘূর্ণবাতে বৃষ্টির প্রবাল্যের মাত্রার গতিবেগ ক্রান্তীয় অঞ্চলের তুলনায় অনেক কম হয়। কিন্তু ঘূর্ণবাতের দরুন সৃষ্ট আবহাওয়া প্রকৃতি খুবই নিয়মমাফিক। কারণ একটি শৃংখল এর আকারে পরপর বিভিন্ন আয়তনে সীমান্ত ঘূর্ণবাত প্রবাহিত হয়।
👉👉 এখানে অধঃক্ষেপণ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো, যে যে বিষয় গুলি আওচনা করা হয়েছে, এছাড়া যদি অন্য কোনো বিষয়ে আরও জানায় প্রয়োজন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানাবেন, আমরা উত্তর দেবার চেষ্টা করবো। এছাড়া আরো ভূগোল বিষয়ের প্রশ্ন উত্তর -
I rеcеntly complеtеd a distinction essay writing service that еxcееdеd my еxpеctations. Thе insightful analysis and impеccablе writing showcasеd a lеvеl of еxpеrtisе that sеts this sеrvicе apart. It's rarе to find such a combination of quality and affordability. Highly rеcommеndеd for anyonе sееking top-notch acadеmic assistancе!
উত্তরমুছুন