ইলিয়াস গল্পের প্রশ্ন উত্তর | নবম শ্রেণির বাংলা গল্প প্রশ্ন উত্তর | iliyas Question and Answer

ইলিয়াস গল্পের প্রশ্ন উত্তর | ইলিয়াস নবম শ্রেণির বাংলা গল্প গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর | নবম শ্রেণির বাংলা গল্প প্রশ্ন উত্তর | iliyas Question and Answer | ইলিয়াস নবম শ্রেণির বাংলা গল্প গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর | নবম শ্রেণির বাংলা গল্প প্রশ্ন উত্তর | iliyas Question and Answer | ইলিয়াস গল্পের প্রশ্ন উত্তর | ইলিয়াস গল্পের প্রশ্ন উত্তর | ইলিয়াস, ইলিয়াস লিও তলস্তয়, ইলিয়াস নবম শ্রেণী বাংলা, ইলিয়াস প্রশ্ন উত্তর, ইলিয়াস প্রশ্ন-উত্তর আলোচনা, ইলিয়াস নবম শ্রেণী প্রশ্ন উত্তর, ইলিয়াস বাংলা সাজেশন, ইলিয়াস প্রশ্নোত্তর সাজেশন, ইলিয়াস mcq, ইলিয়াস ছোট প্রশ্ন উত্তর, ইলিয়াস এক কথায় উত্তর দাও, ইলিয়াস ছোট প্রশ্ন উত্তর, ইলিয়াস সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা ভিত্তিক প্রশ্ন, ইলিয়াস বড় প্রশ্ন উত্তর, Ilyas Tolstoy, Ilyas class 9, Ilyas class 9 Bangla, Ilyas class 9 question answer, Ilyas class 9 question answer, Ilyas question answer Bangla class 9, West Bengal Board Bengali suggestion Ilyas class 9, Ilyas question answer suggestion WBBSE, Ilyas MCQ, Ilyas SAQ, Ilyas DAQ, Ilyas short questions, Ilyas long question answer


ইলিয়াস গল্পের সারসংক্ষেপ

   লিও টলস্টয় রচিত' ইলিয়াস গল্পটি একটি নীতিমূলক গল্প। এই গল্পে একজন সামান্য মানুষের জীবনের পরিকাঠামের বিভিন্ন অধ্যায় কে সুন্দরভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।  

   ইলিয়াস নামের এক ব্যক্তি এই ইলিয়াস গল্পটির মূল চরিত্র  সে রাশিয়ার উফা প্রদেশে বসবাস করে। এই উভাপ্রদেশের একটি পশুপালক পরিবারের সদস্য ছিলেন ইলিয়াস। ইলিয়াসের বিয়ে হওয়ার এক বছর পর তার বাবা মারা যান আর পরিবারের সমস্ত দায়িত্ব তার কাঁধের উপর বর্তায়। 

  তারপর থেকেই ইলিয়াস কঠোর পরিশ্রম করে তার বাবার রেখে যাওয়া সাতটি ঘটকি দুটি গরু ও কুড়িটি ভেড়া নিয়ে পরিশ্রম শুরু করে দেড়শ গরু মোষ 200 ঘোড়া আর বারোশো ভেড়া তৈরি করে।

ইলিয়াস গল্পের প্রশ্ন উত্তর | নবম শ্রেণির বাংলা গল্প প্রশ্ন উত্তর | iliyas Question and Answer


   ইলিয়াসের এই অর্থনৈতিক উন্নতির ফলেও তার চরিত্রের কোন পরিবর্তন হয় না। সে এবং তার স্ত্রী সাম সেমাগী সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করে আর বিভিন্ন আগত অতিথিদের সেবা করে। এর ফলে ইলিয়াসের পারিবারিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু হয় তার এক পুত্র মারামারিতে মারা যায় অন্য পুত্র তাকে অগ্রাহ্য করে ফলে বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়।

   এরপর দেশে আসে চরম দুর্ভিক্ষ আর মড়ক। তার ফলে তার অনেক পশু মারা যায় আর দুর্ধর্ষ জাতির আক্রমণে তার দলের সবচেয়ে ভালো ঘোড়াগুলি চুরি হয়ে যায়। তখন সে দুর্দশার একদম চরমে নেমে যায়। তার নিজের বলতে আর কিছুই থাকে না সহায় সম্বলহীন অবস্থায় বাস করতে থাকে একসময়ের সম্ভ্রান্ত ইলিয়াস।

   তার এই দুর্দশা দেখে তারই এক প্রতিবেশী মোঃ শাহ তার উপর করুণা করে, ইলিয়াস তার স্ত্রীকে তার বাড়িতে কাজের জন্য রেখে দেয়। প্রথমদিকে ইলিয়াস এবং তার স্ত্রীর কষ্ট হলেও পরের দিকে মানিয়ে নিতে শুরু করে। একদিন মহম্মদ শা'র বাড়িতে কয়েকজন অতিথির আগমন ঘটলে সেখানে ইলিয়াসের পূর্ব পরিচয়ের কথা জানতে পেরে তারা তাদের মনের কথা জানতে চাই।

   ইলিয়াস এবং তার স্ত্রীর জীবন উপলব্ধি জানতে পেরে তারা কঠিন জীবন সত্যি উপস্থিত হয়। কারণ সাম শেমাগী তাদের বলেছিলো -

   জীবনের প্রকৃত সুখ কি তা এই বাড়িতে এসে বুঝতে পেরেছি। এই অর্থহীন (সম্ভ্রান্ত) জীবন সব থেকে ভালো, কারণ এই জীবনে কোনো চিন্তা নেই, কোনো ভাবনা নেই সকাল সন্ধ্যা শুধু মনিবের ভালোর চিন্তা করি, এখন অনেকটা সময় পাই ঈশ্বরের উপাসনা করার জন্য, কিন্তু সেই জীবনে সেই সময় পর্যন্ত ছিল না।

   সেই সময় ঘোড়া, গরু, ভেড়া গুলো নিয়ে নানান দুশ্চিন্তা হতো, তার ফলে রাতে ভালো ঘুম হতো না। সুতরাং ওই জীবন এর থেকে বর্তমান সহায় সম্বল হীন জীবনই শ্রেষ্ঠ।

   যে সুখের সন্ধানে আমরা পঞ্চাশটা বছর পর করে এসেছি, সেই সুখ আমরা এখন পেয়েছি। ইলিয়াসের স্ত্রী অর্থাৎ সাম সেমাগীর কথা শুনে তারা কথাটার মাহাত্ম্য ভাবতে বসে।


ইলিয়াস গল্পের MCQ প্রশ্ন উত্তর



ইলিয়াসের বাসস্থান কোথায় ছিল?

 - ইলিয়াসের বাসস্থান ছিল  উফা প্রদেশে।


ইলিয়াসের বাবা কখন মারা গিয়েছিলেন?

-ইলিয়াসের বিয়ের এক বছর পর তার বাবা মারা গিয়েছিলেন।


কত বছর পরিশ্রম করে ইলিয়াস প্রচুর সম্পত্তি করেছিল? 

-পঁয়ত্রিশ বছর পরিশ্রম করে ইলিয়াস প্রচুর সম্পত্তি করেছিল। 


ইলিয়াসের  কয়টি সন্তান ছিল ? 

- ইলিয়াসের দুই ছেলে ও একটি মেয়ে ছিল। 


মুহম্মদ শা ইলিয়াসকে কী কাজ দিল ? 

 মহম্মদ শা ইলিয়াসকে গ্রীষ্মকালে তরমুজের খেত দেখভাল করা এবং শীতকালে গােরু-ঘােড়াদের খাওয়ানাের কাজ দিয়েছিল ।


ইলিয়াসের স্ত্রীর জন্য মহম্মদ শা কী কাজ দিয়েছিল ? 

 মহম্মদ শা ইলিয়াসের স্ত্রীকে ঘােটকীদের দুধ দোয়ানাে এবং কুমিস তৈরির কাজ দিয়েছিল। 


ইলিয়াস ও তার স্ত্রী মহম্মদ শার বাড়িতে কীসের মতাে কাজ করত ? 

  ইলিয়াস ও তার স্ত্রী মহম্মদ শার বাড়িতে ভাড়াটে মজুরের মতাে কাজ করত। 


“ক্রমে ক্রমে সব সয়ে গেল”—কার কী সয়ে গেল? 

  বৃদ্ধ ইলিয়াস ও তার স্ত্রী প্রতিবেশী মহম্মদ শার বাড়িতে থেকে ভাড়াটে মজুরের মতাে পরিশ্রম করত। প্রথমদিকে কষ্ট হলেও পরে তাদের এই পরিশ্রম সয়ে যায়। 


“তা ছাড়া তারা অলস নয়”—কারা অলস নয়? 

   লিও তলস্তয়ের ইলিয়াস’ গল্পের উধৃতাংশে বৃদ্ধ ইলিয়াস ও তার স্ত্রী শাম-শেমাগির কথা বলা হয়েছে । 


মহম্মদ শার বাড়িতে আসা আত্মীয়দের মধ্যে একজন কী ছিলেন? 

  মহম্মদ শার বাড়িতে আগত আত্মীয়দের মধ্যে একজন ছিলেন মুসলিম পন্ডিত বা মােল্লাসাহেব।


“এ তল্লাটের সবচেয়ে ধনী ছিল’-কে এই তল্লাটের ধনী ছিল? 

  আলােচ্য অংশে বৃদ্ধ ইলিয়াস একসময় এলাকার সবচেয়ে ধনী ছিল। 


অতিথিরা ইলিয়াসের স্ত্রীর কাছে কী জানতে চেয়েছিলেন? 

   অতিথিরা ইলিয়াসের স্ত্রীর কাছে আগেকার সুখী জীবন আর এখনকার কষ্টের জীবন সম্পর্কে তার মনের কথা জানতে চেয়েছিলেন। 

“এই তার যা কিছু বিষয় সম্পত্তি” — কী কী বিষয়সম্পত্তির কথা বলা হয়েছে? 

  উদ্ধৃতাংশে তার বিষয়সম্পত্তি বলতে সাতটা ঘােটকী, দুটো গােরু এবং কুড়িটা ভেড়ার কথা বলা হয়েছে।


কত বছর পরিশ্রম করে ইলিয়াস প্রচুর সম্পত্তি বানিয়েছিল?

  দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছর পরিশ্রম করে ইলিয়াস প্রচুর সম্পত্তি বানিয়েছিল। 


“ওর তাে মরবারই দরকার নেই।” — কার, কেন মরবার দরকার নেই? 

  বিপুল সম্পত্তির মালিক ইলিয়াসের কোনাে কিছুর অভাব ছিল না বলেই প্রতিবেশীরা বলেছিল যে তার মরবার দরকার নেই । 


“দূরদূরান্ত থেকে অতিথিরা তার সঙ্গে দেখা করতে আসে।” — কার সঙ্গে অতিথিরা দেখা করতে আসে? 

  দূরদূরান্ত থেকে অতিথিরা বিপুল সম্পত্তির অধিকারী প্রভাবশালী ইলিয়াসের সঙ্গে দেখা করতে আসত।


ইলিয়াস অতিথিদের কী দিয়ে সেবা করত ? 

  ইলিয়াস তার অতিথিদের কুমিস, শরবত, মাংস প্রভৃতি ভােজ্য ও পানীয় দিয়ে সেবা করত।


 ইলিয়াসের কয়টি সন্তান ছিল?

ইলিয়াসের দুই ছেলে ও এক মেয়ে অর্থাৎ মােট তিনটি সন্তান ছিল । 


ইলিয়াস যখন গরিব ছিল ছেলেরা তাকে কীভাবে সাহায্য করত? 

ইলিয়াস যখন গরিব ছিল তখন ছেলেরা তার সঙ্গে গোরু-ভেড়া চরিয়ে তার কাজে সাহায্য করত। 


“তারা আয়েশি হয়ে উঠল” — কারা, কখন আয়েশি হয়ে উঠল? 

ইলিয়াস ধনী ব্যক্তি হয়ে উঠলে তার ছেলেরা আয়েশি হয়ে উঠল। 


ইলিয়াসের বড়াে ছেলেটির কীভাবে মৃত্যু ঘটে? 

ইলিয়াস ও তার পরিবার যখন সচ্ছল জীবন কাটাতে শুরু করা, তখন এক মারামারির ঘটনায় তার বড়ো ছেলেটির মৃত্যু ঘটে। 


“অতিথিরা বিস্মিত”-কেন? 

ধনীজীবনে সুখের সন্ধান না পেয়ে ভাড়াটে মজুরের জীবনে সত্যিকারের সুখের সন্ধান তারা পেয়েছেন — শাম-শেমাগির মুখে এ কথা শুনে অতিথিরা বিস্মিত হয়।


“অন্যদিকে দুশ্চিন্তা’—কোন্ দুশ্চিন্তার কথা বলা হয়েছে? 

নেকড়ে এসে ঘােড়ার বাচ্চা বা গােরুর বাছুর নিয়ে গেল কিনা কিংবা চোর এসে ঘােড়াগুলােকে নিয়ে গেল কি না — এই দুশ্চিন্তার কথা বলা হয়েছে। 


ইলিয়াস কোথায় বসবাস করত? 

 উফা প্রদেশে ইলিয়াস বসবাস করতো। 


ইলিয়াস কোন জনগোষ্ঠীর মানুষ ছিল? 

ইলিয়াস একজন বাস্‌কির জনগোষ্ঠীর মানুষ ছিলেন।


কত বছর পরিশ্রম করে ইলিয়াস প্রচুর সম্পত্তি বানিয়েছিল? 

পঁয়ত্রিশ বছর পরিশ্রম করে ইলিয়াস প্রচুর সম্পত্তি বানিয়েছিলেন। 


“সকলেই তাকে ঈর্ষা করে”- কাকে কেন সকলেই ঈর্ষা করে? 

ইলিয়াস একজন ধনী ব্যাক্তি ছিলেন, তাঁর প্রতিপত্তি দেখে সকলেই তাকে ঈর্ষা করতেন। 


ইলিয়াস অতিথিদের কী দিয়ে সেবা করত? 

ইলিয়াস অতিথিদের কুমিস, চা, শরবত এবং মাংস দিয়ে সেবা করতো। 


কারা ইলিয়াসের সবচেয়ে ভালো ঘোড়াগুলি চুরি করেছিল? 

‘কিরবিজ’-রা ইলিয়াসের সবচেয়ে ভালো ঘোড়াগুলি চুরি করেছিল। 


“অতিথিরা বিস্মিত” – কেন? 

ইলিয়াস এবং তাঁর স্ত্রী, ধনী অবস্থায় নয় বরং কপর্দকহীন অবস্থায় সুখের সন্ধান পেয়েছেন, একথা শুনে অতিথিরা বিস্মিত হয়েছিলেন। 


“কথা বলবার সময় নেই।” – কখন কথা বলবার সময় ছিল না? 

ইলিয়াস এবং তাঁর স্ত্রী, যখন ধনী ছিলেন, নানাবিধ কাজের চাপে তাদের কথা বলবার সময় ছিলনা।


“ফলে সারারাত ঘুমই ছিল না।” – সারারাত ঘুম না থাকার কারণ কী ছিল? 

গৃহপালিত জন্তুদের অনিষ্টের আশঙ্কায় ইলিয়াস এবং তাঁর স্ত্রী-র সারারাত ঘুম হতো না। 


ইলিয়াস গল্পে কাকে ‘বাবাই’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে? 

বৃদ্ধ ইলিয়াসকে ‘বাবাই’ বলে সম্বোধন করা হয়েছে। 


‘ইলিয়াস’ গল্পটি কার লেখা? 

ইলিয়াস’ গল্পটি রুশ সাহিত্যিক লিও তলস্তয়ের লেখা। 


‘ইলিয়াস’ গল্পটি কে বাংলায় অনুবাদ করেছেন?

‘ইলিয়াস’ গল্পটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন মণীন্দ্র দত্ত।


"কিন্তু বড়লোক হওয়ার পরে তারা আয়েশি হয়ে উঠল"-কারা, কেন আয়েশি হয়ে উঠল?

ইলিয়াসের ছেলেরা বড়োলোক হওয়ার পর আয়েশি হয়ে উঠেছিল।


ইলিয়াস গল্পের 3 প্রশ্ন উত্তর

    লিও টলস্টয় রচিত ইলিয়াস গল্প থেকে যে সকল সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন এবং উত্তর অর্থাৎ ইলিয়াস গল্পের তিন মার্কের জন্য যে সকল প্রশ্ন উত্তর আমাদের পড়তে হবে সেগুলি নিচে যথাযথ উত্তর সহকারে আলোচনা করা হলো এছাড়াও যদি অন্য কোন প্রশ্নের উত্তর তোমাদের প্রয়োজন হয় অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে তা সময়মতো দিয়ে দেয়া হবে।।

 ইলিয়াসের অবস্থা খারাপ হয়েছিল কেন?

  ছোটো ছেলেকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেবার পর পরই ইলিয়াসের অবস্থা খারাপ হয়েছিল। ছেলেকে একটি বাড়ি, কিছু গোরু-ঘোড়া দিয়ে দেবার পরেই তার ভেড়ার পালে মড়ক লাগে। পরের বছর দুর্ভিক্ষে কিছু গোরু-মোষ মারা যায়। কিরবিজরা তার সবচেয়ে ভালো ঘোড়াগুলি চুরি করে নিয়ে যায়।


 ইলিয়াসের  দূরাবস্থা কখন চরমে উঠেছিল।

  সত্তর বছর বয়সে ইলিয়াসের অবস্থা খারাপের সঙ্গে সঙ্গে তার শরীরের জোরও কমে যায়। তখন সে বাধ্য হয়ে তার পশমের কোর্ট, কম্বল, ঘোড়ার জিন, তাঁবু এবং সবশেষে গৃহপালিত পশুগুলি বিক্রি করে দিয়ে দুর্দশার একেবারে শেষ অবস্থায় পৌঁছায়।


“ইলিয়াসের অবস্থা খারাপ হয়ে পড়ল।”- ইলিয়াসের অবস্থা কীভাবে খারাপ হয়ে পড়ল ? 

  ইলিয়াস যখন গরীব ছিল; সেই সময় তাঁর পুত্ররা ইলিয়াসের সাথে কাজ করতো। কিন্তু অবস্থার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে তারা আয়েশি হয়ে ওঠে। ধীরে ধীরে পুত্রদের সাথে বিবাদ বাড়লে ইলিয়াস তাদের কিছু সম্পত্তি দিয়ে আলাদা হয়ে যায়, ফলে ইলিয়াসের সম্পত্তি হ্রাস হয়। এরপর মড়ক এবং দুর্ভিক্ষের ফলে বহু গৃহপালিত পশুর মৃত্যু হয়। ‘কিরবিজ’রা ইলিয়াসের সবচেয়ে ভালো ঘোড়াগুলি চুরি করে নিয়ে যায়। এইভাবে সময়ের সাথে ইলিয়াসের অবস্থার অবনতি ঘটে এবং সত্তর বছর বয়সে ইলিয়াস একেবারে কপর্দক শূন্য হয়ে যায়।


“তাকে দেখতে পেয়ে মহম্মদ শা অতিথিদের বলল”- ‘তাকে’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে? তার সম্পর্কে মহম্মদ শা অতিথিদের কী বলল? 

   ‘তাকে’ বলতে এখানে ইলিয়াসের কথা বলা হয়েছে। মহম্মদ শা তাঁর গৃহে আগত অতিথিদের বলেছিলেন যে, ইলিয়াস একসময়ের ঐ তল্লাটের সবচেয়ে ধনী ব্যাক্তি ছিলেন, কিন্তু আজ অবস্থার ফেরে ইলিয়াস মহম্মদ শা-র গৃহে মজুরের মত থাকেন এবং তার স্ত্রী ঘোটকীর দুধ দোয়। 


“এ বিষয়ে তিনিই পুরো সত্য বলতে পারবেন।” – ‘তিনি’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে? ‘তিনি’ সত্য বলতে পারবেন কেন? 

   তিনি বলতে এখানে ইলিয়াসের স্ত্রী শাম – শেমাগির কথা বলা হয়েছে। মহম্মদ শা-এর গৃহে আগত অতিথিরা ইলিয়াসে বর্তমান পরিস্থিতির কথা জানতে চাইলে, তিনি তাঁর স্ত্রীকে জিগ্যেস করতে বলেন। এর কারণ হিসাবে তিনি বলেন, তাঁর স্ত্রী মেয়ে মানুষ, তাঁর মনেও যা মুখেও তাই। এইকারণে শাম-শেমাগি তাদের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সত্য কথাই বলবেন। 


‘এটা খুবই জ্ঞানের কথা’ – কার, কোন কথাকে ‘জ্ঞানের কথা’ বলা হয়েছে ?’ 

   ইলিয়াস এবং তাঁর স্ত্রী জীবনে অভিজ্ঞতা, তাদের মনিবের অতিথিদের সাথে ভাগ করে নিচ্ছিলেন। ইলিয়াস দম্পতী বলেন, যখন তারা ধনী ছিলেন, সেইসময় তাদের জীবনে অর্থসুখ থাকলেও জীবনে কোনরূপ শান্তি ছিলনা, মন সর্বদাই দুশ্চিন্তায় আচ্ছন্ন থাকতো। তারা দরিদ্র হয়ে মনিবের বাড়ি কাজ করার সময় প্রকৃত সুখের সন্ধান পেয়েছেন, কারণ আজ তাদের কোনরূপ দুশ্চিন্তা নেই। এটাই প্রকৃত জীবন, তারা প্রথমে সব ধন-সম্পত্তি হারিয়ে দুঃখ পেয়েছিলেন, কিন্তু ঈশ্বরের আশীর্বাদে জীবনের প্রকৃত সত্যকে উপলব্ধী করতে পেরেছেন। ইলিয়াসের এই কথাগুলিকেই মোল্লা সাহেব ‘জ্ঞানের কথা’ বলে উল্লেখ করেছেন। 


“অতিথিরা বিস্মিত।’—অতিথিরা বিস্মিত হলেন কেন ? 

   লিও তলস্তয় রচিত ‘ইলিয়াস’ গল্পে অতীতজীবনের সুখ এবং বর্তমান জীবনের দুঃখের দিক থেকে জীবন সম্পর্কে ইলিয়াস দম্পতির উপলব্ধির কথা জানতে চেয়েছিলেন মহম্মদ শার বাড়িতে আগত একজন অতিথি । এর উত্তরে ইলিয়াসের স্ত্রী শাম-শেমাগি তাঁদের জানায় যে পঞ্চাশ বছরের দাম্পত্যজীবনে প্রচুর ধনসম্পদের অধিকারী হয়েও তারা সুখ খুঁজে পায়নি৷ কিন্তু সর্বহারা হয়ে ভাড়াটে মজুরের জীবন কাটানােয় তারা প্রকৃত সুখের সন্ধান পেয়েছে। এই কথা শুনে অতিথিরা বিস্মিত হন৷ 


“প্রতি বছরই তার অবস্থার উন্নতি হতে লাগল।” – কার অবস্থার, কীভাবে উন্নতি হতে লাগল? 

   আলোচ্য উধৃতিতে ইলিয়াসের অবস্থার কথা বলা হয়েছে। ইলিয়াসের বিবাহের একবছর পরে যখন তার বাবা মারা যান, তখন ইলিয়াস না ধনী, না দরিদ্র। এরপর গৃহপালিত পশুর সূপরিকল্পিত ব্যবহারের ফলে তার সম্পত্তি কিছু কিছু করে বাড়তে শুরু করে। ইলিয়াস এবং তাঁর স্ত্রী, ভোরবেলা সবার আগে ঘুম থেকে উঠতেন এবং সবার শেষে ঘুমাতে যেতেন, সারাদিন তাদের কাজ কর্মের মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হত। এইভাবে ধারাবাহিক কঠিন পরিশ্রমের ফলে ইলিয়াসের অবস্থার উন্নতি হতে শুরু করে। 


“ইলিয়াসের তখন খুব বোলবোলাও” – ‘বোলবোলাও’ শব্দের অর্থ উল্লেখ করে উদ্ধৃতাংশটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো। 

  ‘বোলবোলাও’ শব্দের অর্থ প্রতিপত্তি। পয়ত্রিশ বছরের কঠোর ধারাবাহিক পরিশ্রমের ফলে ইলিয়াসের অবস্থার উন্নতি ঘটে। সাতটি ঘোটকি, দুটি গরু এবং কুড়িটি ভেড়া থেকে শুরু করে তাঁর গৃহপালিত পশুর পরিমাণ দুশো ঘোড়া, দেড়শো গোরু – মোষ এবং বারোশো ভেড়ায় পৌছায়। ভাড়াটে মজুরেরা গরু-ঘোড়ার দেখা-শোনা করে এবং ভাড়াটে মজুরানীরা দুধ দোয়, কুমিস, মাখন ও পনীর তৈরি করে। তাঁর এই উন্নতি এবং প্রতিপত্তি দেখে পাশাপাশি সকলেই তাকে ঈর্ষা করে। 


“দূর দূরান্তর থেকে অথিতিরা তার সঙ্গে দেখা করতে আসে।” অতিথিরা কার সঙ্গে দেখা করতে আসত? সে অতিথিদের কীভাবে সেবা করত? 

   আর্থিক অবস্থার উন্নতি হবার পর, ইলিয়াসের ভালো ভালো লোকের সঙ্গে পরিচয় হতে শুরু করে। দূর- দুরান্ত থেকে অতিথিরা ইলিয়াসের সাথে দেখা করতে আসতো। আগত অথিতিদের সকলকেই ইলিয়াস ভোজ্য – পানীয় দিয়ে আপ্যায়ন করতো। অতিথীদের জন্য সর্বদায় প্রস্তুত থাকতো, কুমিস, শরবত, চা এবং মাংস। অথিতিদের সেবার জন্য একটা – বা দুটো ভেড়া মারা হত, এমনকি অথিতি সংখ্যায় বেশি থাকলে ঘোটকীও মারা হত।


"তাদের কাজ করে খেতে হত"—কাদের, কেন কাজ করে খেতে হত? 

উত্তর-  ইলিয়াস ও তার স্ত্রীর অবস্থা একেবারে খারাপ হয়ে যাবার জন্যেই তাদের কাজ করে খেতে হত। 

   ইলিয়াস এবং তার স্ত্রী তাদের সমস্ত সম্পত্তি হারিয়ে দুর্দশার একদম চরম পর্যায়ে নেমে যায়। এমত অবস্থায় তাদের এক পড়শী মোহাম্মদ শা নামের এক ব্যক্তি তাদের প্রতি সদয় হয়। ইলিয়াস এবং তার স্ত্রী কে বলে তারা বুড়ো বুড়ি যেন তার বাড়িতে থাকে। কিন্তু বিনিময়ে তার ক্ষেতে কাজ করতে হবে আর্ বুড়িকে বাড়ির সব কাজ করে দিতে হবে, উপরন্তু তারা মনিবের এই সব কাজের সাথে আগেই পরিচিত ছিল বলে তারাও কাজ করে মোহাম্মদের বাড়িতে থাকতে রাজি হয়ে যায়।


"সে একেবারে সর্বহারা হয়ে পড়ল " - কে, কীভাবে সর্বহারা হয়ে পড়ল লেখো।ইলিয়াস কত বছর বয়সে পৌঁছে একেবারে সর্বহারা হয়ে গেল।

   ছোটো ছেলেকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলেও ইলিয়াস তাকে একটা বাড়ি এবং সামান্য কিছু সম্পত্তি নিয়েছিল। তারপরেই তার সম্পত্তিতে বেশ টান পড়ে। এরা পর পরই ইলিয়াসের জীবনে নানা বিপর্যয় নেমে আসে। হঠাৎই একদিন নড়ক লেগে তার ভেড়ার পালের অনেকগুলি ভেড়া মরে গেল। ঠিক পরের বছরই দুর্ভিক্ষ দেখা দিল। খড় না পাওয়ায় সে বছর শীতকালে অনেক গোরু-মোষ না খেয়ে মরল। আবার কিরবিজ্ঞরা ইলিয়াসের সবথেকে বড়ো ভালো ঘোড়াগুলি চুরি করে নিয়ে গেল। এইভাবে ইলিয়াসের বিষয় সম্পত্তি নষ্ট হওয়ার সাথে সাথে শরীরের জোরও কমে যেতে লাগল এবং ইলিয়াস সর্বহারা হয়ে পড়ল।


ইলিয়াস গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর

   নবম শ্রেণীর বাংলা পাঠ্য বইয়ের ইলিয়াস গল্প টি একটি নীতি সমৃদ্ধ গল্প। এই গল্প থেকে আমরা উপরে সংক্ষিপ্ত এবং অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন এবং তার উত্তর নিয়ে আলোচনা করেছি। এখন আমরা নিচে ইলিয়াস গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর নিয়ে আলোচনা করবো। এই সকল প্রশ্ন ছাড়া যদি অন্য কোনো প্রশ্নের উত্তর প্রয়োজন হয় তবে কমেন্ট করে জানাবে।


"ওর তো  মরবার  দরকার নেই”—কার মরবার দরকার নেই। বক্তার এমন মনোভাবের কারণ কী ?


  ইলিয়াসের মরবার দরকার নেই বলে মনে করেছে বক্তা। ইলিয়াস সম্পর্কে এমন কথা বলত আশপাশের প্রতিবেশীরা। কারণ তারা ইলিয়াসের প্রভাব প্রতিপত্তিতে খুব ঈর্ষান্বিত ছিল। ইলিয়াসের বাসস্থান ছিল উফা প্রদেশে। প্রথম জীবনে তার সম্পত্তি খুবই সামান্য ছিল। সাতটা ঘোটকী, দুটো গোৰু আর কুড়িটা ভেড়া—এই ছিল তার বিষয় সম্পত্তি।

    সেই সামান্য বিষয়ই দেখাশোনার কৃতিত্বে, ব্যবস্থাপনার গুরুত্বে এক সময় বিশাল আকার ধারণ করেছিল। ইলিয়াস ও তার স্ত্রী একসাথে প্রচুর পরিশ্রম করত। সকলের আগে ঘুম থেকে উঠত। ঘুমোতে যেতও সকলের পরে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পরিশ্রম করে প্রচুর সম্পত্তি করেছিল ইলিয়াস।

 35 বছর এইভাবে পরিশ্রম করে ইলিয়াস দুশো ঘোড়া, দেড়শো গোরু, মোষ, বারোশো ভেড়া নিজের সম্পত্তি করেছিল। ভাড়াটে মজুর-মজুরানি রেখে তাদের দেখাশোনার ব্যবস্থা করেছিল। তারপর ইলিয়াসের প্রচুর প্রভাব প্রতিপত্তি হল। কোনো কিছুরই অভাব নেই। এইসব দেখেই প্রতিবেশীদের মনে হয়েছিল ইলিয়াস তো ভাগ্যবান পুরুষ ওর তো মরবারই দরকার নেই।'


"বৃদ্ধ দম্পতিকে সাহায্য করবার তখন কেউ নেই'' কোন সময়ের কথা বলা হয়েছে? সাহায্য করবার জন্য কোন মানুষ নেই কেন ? 


   ইলিয়াসের সম্পতি যখন ধীরে ধীরে কমে আসতে লাগল, নিজের বাড়ি থেকে সব কিছু বিক্রি করে বাইরে চলে আসতে হয়ে ছিল সেই সময়ের কথা বলা হয়েছে। 

 একটু একটু করে ইলিয়াস তার অবস্থার উন্নতি করছিল, ছেলেদের বিয়ে দিয়ে যখন সে গরিব ছিল তখন তার ছেলেরা সঙ্গে সঙ্গে থাকত, কাজকর্ম করত, সকল গরু ঘোড়া গুলি দেখাশোনা করত। কিন্তু তার ছেলেরা আয়েশি হয়ে উঠল।

 ইলিয়াসের বড়ো ছেলেটি মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে মারা গেল। ছোট ছেলেটি এমন একজনকে বিয়ে করে আনল যে তারা বাপের আদেশ অমান্য করতে থাকল। বাধ্য হয়ে ইলিয়াস তার বাড়ি থেকে বের করে দিল। বৃদ্ধ বয়সে ইলিয়াসকে সাহায্য করবার মতো আর কেউই ছিল না।


“পঞ্চাশ বছর ধরে সুখ খুঁজে খুঁজে এতদিনে পেয়েছি।” এই সুখের পরিচয় দাও। 

   এই উক্তিটি ইলিয়াসের স্ত্রী – শাম – শেমাগির। ইলিয়াস এবং তাঁর স্ত্রী এককালে ধনী ছিলেন, ঐ অঞ্চলে তাদের প্রতিপত্তি ছিল চোখে পড়ার মতন। কিন্তু সেই সময় তাদের অর্থসুখ থাকলেও তাদের মনে শান্তি ছিল না।

  কোনো অতিথিরা এলে যাতে লোকনিন্দা না হয় তাই তটস্থ হয়ে তাদের সেবা করতে হত, মজুরেরা যাতে কাজে ফাঁকি না দিতে পারে তার জন্য কড়া নজর রাখতে হত, গৃহপালিত পশুর ক্ষতি হবে এই ভেবে সর্বদা মনে দুশ্চিন্তা লেগেই থাকতো। এইসবের মাঝে নিজেদের মধ্যে কথাবলা বা ঈশ্বরচিন্তা করার কোনরূপ সময় হতো না। 

 কিন্তু আজ যখন তারা দরিদ্র, এখন তাদের অর্থসুখ না থাকলেও মনে শান্তি আছে। তারা সকালে উঠে নিজেদের মধ্যে কথা বলার সুযোগ পান, যথাসাধ্য মনিবের সেবা করেন।  সেখান থেকেই তাদের আহারের ব্যাবস্থা করেন, তাদের খাদ্যাভাব নেই, রাতের শোবার জায়গার অভাব নেই, ঈশ্বরচিন্তার জন্য যথেষ্ট সময়এখন তাদের আছে। তাই তারা বলেছেন যে পঞ্চাশ বছর ধরে খুঁজে খুঁজে তারা প্রকৃত সুখের সন্ধান পেয়েছেন। 


“ইলিয়াসের অতিথিবৎসলতার কথা স্মরণ করে তার খুব দুঃখ হলাে।” — কার কথা বলা হয়েছে ? সে কী করেছিল ? ইলিয়াসের জীবনে তার কী প্রভাব পড়েছিল ? 

   ‘ইলিয়াস’ গল্পে উল্লিখিত অংশে ইলিয়াসের প্রতিবেশী মহম্মদ শার কথা বলা হয়েছে। মহম্মদ শা নিজে ধনী না হলেও তার অভাব ছিল না। সে ছিল খুব ভালাে লােক। তাই ইলিয়াসের দুরবস্থায় তার খুব দুঃখ হয় এবং সে ইলিয়াস ও তার স্ত্রীকে নিজের বাড়িতে এসে থাকতে বলে।

  এর বিনিময়ে ঠিক হয় ইলিয়াস তার ক্ষমতা অনুযায়ী গরমকালে তরমুজ খেতে কাজ করবে। আরশীতকালে গােরু-ঘােড়াদের খাওয়াবে। তার স্ত্রী শাম-শেমাগি ঘােটকীগুলাের দুধ দুইবে এবং কুমিস তৈরি করবে। মহম্মদ শা তাদের দুজনেরই খাওয়াপরার দায়িত্ব নেয়। এ ছাড়াও যদি কিছু লাগে তা দিতে প্রতিশ্রুত হয়৷

  ইলিয়াস এই উদারতার জন্য মহম্মদ শা-কে ধন্যবাদ দিয়েছিল। ভাড়াটে মজুরের মতাে কাজ করতে গিয়ে প্রথমদিকে তাদের খুবই কষ্ট হত, কিন্তু ক্ৰমে সবই সহ্য হয়ে গেল। যত পারত কাজ করত, আর মহম্মদ শার বাড়িতে থাকত। একদিন নিজেরা মনিব ছিল বলে তারা সব কাজই ভালােভাবে করতে পারত।

  কিন্তু তার থেকে গুরুত্বপূর্ণ যে, অর্থ-সম্পত্তিই সুখের ভিত্তি নয়—তা ইলিয়াস ও তার স্ত্রী উপলব্ধি করে। কাজের বাইরে ফাঁকা সময়টা তারা গল্প করার বা ভাবার কাজে লাগাতে পারে। আগের থেকে অনেক দুশ্চিন্তামুক্ত এই জীবনেই তারা প্রকৃত সুখ খুঁজে পায়। 


 ইলিয়াস চরিত্রটি বিশ্লেষণ করাে। 

  লিও তলস্তয় রচিত ইলিয়াস’ গল্পটির অন্যতম প্রধান চরিত্র ইলিয়াস। তিনি জীবনের দুটি দিকই দেখেছেন, স্বাচ্ছন্দ্য এবং অভাব। গল্পে তার চরিত্রের যে দিকগুলি দেখা যায় সেগুলি হল —  উফা প্রদেশে বসবাসকারী বাকির জনগােষ্ঠীভুক্ত ইলিয়াসের দুই পুত্র ও এক কন্যা ছিল । স্ত্রীর নাম ছিল শাম-শেমাসি।

   জীবনের প্রথম দিকে আর্থিক সচ্ছলতা না থাকলেও পরবর্তীকালে অক্লান্ত পরিশ্রমে ইলিয়াস ধনী হয়ে ওঠে। আবার ভাগ্যদোষে জীবনের শেষপর্যায়ে সে সমস্ত সম্পত্তি হারিয়ে ভাড়াটে মজুরের জীবন কাটাতে শুরু করে। সে পঁয়ত্রিশ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম ও কর্মের প্রতি নিষ্ঠা থেকেই ইলিয়াস দুশাে ঘােড়া, দেড়শাে গােরু-মােষ, বারােশাে ভেড়া এবং বহু ভাড়াটে মজুরের মালিকে পরিণত হয়।

   শেষজীবনে মজুরের কাজ করার সময়েও সে কঠোর পরিশ্রম করে মনিবকে তুষ্ট রাখত।  ইলিয়াস ছিল অতিথিবৎসল । কুমিস, চা, শরবত, মাংস দিয়ে অতিথিদের যথাযথ আপ্যায়ন করত ইলিয়াস ।তার অতিথিপরায়ণতার কথা স্মরণ করেই মহম্মদ শা তাকে শেষজীবনে আশ্রয় দিয়েছিল। গল্পের নায়ক ইলিয়াস অত্যন্ত কঠোর ছিল বলেই ছােটো পুত্র ও তার ঝগড়াটে স্ত্রী তার আদেশ অমান্য করায় তাদের বাড়ি থেকে বিতাড়িত করেছিল।

   ইলিয়াসের সেই বিতাড়িত পুত্রকেই একটি বাড়ি এবং কিছু গৃহপালিত পশু দান করে সে তার কর্তব্যজ্ঞানেরও পরিচয় দিয়েছে।  জীবনের শেষ পর্যায়ে সমস্ত সম্পত্তি ও সঞ্চয় হারিয়ে সর্বহারা হয়েও ইলিয়াস যেভাবে প্রকৃত সত্য ও সুখ উপলব্ধির কথা বলেছে, তা সকলের কাছে দৃষ্টান্তস্বরূপ এবং নীতি মূলক।


"সে একেবারে সর্বহারা হয়ে পড়ল"- কার কথা বলা হয়েছে তার সর্বহারা হওয়া কারণ কি? 

  ইলিয়াসের কথা বলা হয়েছে উক্তিটিতে।

   ইলিয়াসের অবস্থা প্রথম জীবনে খুব একটা সুখের ছিল না। তার অবস্থার উন্নতি হয়েছিল খুব। প্রচুর পরিত্রানের কলের তার জীবনে সাফল্য এসেছিল। কিন্তু বড়োলোক হওয়ার পরপরই তার ছেলেরা আয়েশি হয়ে পড়ল। বড়ো ছেলেটি মারামারি করে মারা গেল। ছোটো ছেলেটি ঝগড়াটি বউ এনে বাপের আদেশ অমান্য করতে শুরু করল। ফলে ইলিয়াস তাদের বাড়ি যেতে তাড়িয়ে দিল।

  এরপর থেকেই ইলিয়াসের অবস্থা খারাপ হতে শুরু করল। ছোটো ছেলেটিকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলেও ইলিয়াস তাকে একটা বাড়ি ও কিছু গোরু-ঘোড়া দিয়েছিল। ফলে তার সম্পত্তিতে টান পড়ে। পরের বছরই ভেড়ার পালে মড়ক লেগে বেশ কিছু ভেড়া মারা যায়। পরের বছর দুর্ভিক্ষে খড় না পেয়ে অনেকগুলো গোরু-মোন নারা গেল।

   কিরবিজরা সবথেকে ভালো ঘোড়াগুলো চুরি করে নিয়ে গেল। অবস্থা যত খারাপ হতে থাকল ইলিয়াসের শরীরের জোরও কমে যেতে লাগল। বাধ্য হয়ে ইলিয়াস নিজের পশমের কোট, কম্বল, ঘোড়ার জিন ও গৃহপালিত পশুগুলিকেও বিক্রি। করে দিতে বাধ্য হল। দুর্দশা চরম আকার ধারণ করেছিল বলেই ইলিয়াস সর্বহারা হয়ে পড়েছিল।


"বুড়ো-বুড়িকে রেখে মহম্মদ শার ও লাভ হলো- বুড়োবুড়ি কে ? তাদের রেখে মহম্মদ শার কীভাবে লাভবান হয়েছিল? 

  বুড়ো-বুড়ি বলতে এখানে ইলিয়াস ও তার স্ত্রীকে বোঝানো হয়েছে।

  ইলিয়াস ও তার স্ত্রীকে নিজের বাড়িতে রেখে মহম্মদ শা ভীষণভাবেই লাভবান হয়েছিল। ইলিয়াসের করুণ অবস্থা দেখে এখন শার খুব দুঃখ হয়েছিল। সে বলেছিল ইলিয়াস যেন তার স্ত্রীকে নিয়ে তার বাড়িতে এসে থাকে। বয়স ও ক্ষমতায় যদি কুলোয় তাহলে তারা তার তরমুজের খেতে কাজ করবে, শীতকালে গোরু-ঘোড়াগুলোকে খাওয়াবে। তার স্ত্রী ঘোটকীগুলোকে সোহন করে কৃমিস, মাখন, পনির তৈরি করতে পারবে।

   দুজনের খাওয়া পরার চিন্তা করতে হবে না। এমন একটি পরিস্থিতিতে উশা ইলিয়াস ও তার স্ত্রীকে নিজের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল। ইলিয়াস কিন্তু মহম্মদ শার বাড়িতে ভাড়াটে মজুরের তাই থাকত।

  প্রথম জীবনে যেমন কষ্ট করে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল তেমনই মহম্মদ শার জন্যও দুজনে একই পরিশ্রম করত। কষ্ট হলেও আস্তে আস্তে অভ্যাস গিয়েছিল তার সব। নিজে একসময় মনিব ছিল বলেই সব কাজই তারা বুঝত। মহম্মদ শা কে আলাদা করে কিছু ভাবতে হত না। এই কারণেই বুড়ো-বুড়িকে রেখে মহম্মদ শার লাভ হয়েছিল।


এক সময় সে এ তল্লাটের সবচেয়ে ধনী ছিল'—উক্তিটির  বক্তা  কে ? এই কথার মধ্য নিয়ে সে কী বলতে

তিনি উল্লিখিত উক্তিটির বক্তা মহম্মদ শা।

   অতিথিদের উদ্দেশ্য করে মহম্মদ শা ইলিয়াসের পূর্বপরিচয় দিয়েছিল। ইলিয়াস মহম্মদ শার অতিথিদের আপ্যায়নের নানা বন্দোবস্ত করে তাদের সেবা করে চলেছিল। মহম্মদ শা তখন অতিথিদের উদ্দেশ্য করে ইলিয়াসের বিষয়ে সবাইকে জানান। সেন আপাতদৃষ্টিতে এই মানুষটির মধ্যে নজর করবার কিছু নেই। 

  কিন্তু তার বিশেষত্ব হল এই যে, এক সময়ে সে এই অলের সবচেয়ে বড়ো ধনী ছিল। তার নাম ইলিয়াস। ইলিয়াসের সঙ্গে প্রত্যক্ষ পরিচয় অতিধিদের না থাকলেও তার নাম তারা শুনেছিলেন। 

   বর্তমানে তার দুরবস্থার কথা শুনে অতিথিরা দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। ইলিয়াস যে নিজে সর্বহার হয়েও সুখে আছে সেই দৃষ্টান্ত অতিথিদের সামনে তুলে ধরবার জন্যই মহম্মদ শা অতিথিদের কাছে একথা বলেছিলেন।


“এটা খুবই জনের কথা”–  বক্তা কে ? জ্ঞানের কথাটি নিজের ভাষায় লেখো।

      উক্তিটির বক্তা অতিথিদের সাথে আগত জনৈক মোল্লা। তিনি মোহাম্মদ শার বাড়িতে এসেছিলেন।

  সর্বহারা ইলিয়াসের অতীত জীবনের সমৃদ্ধি ও প্রতিপত্তির কথা দেশ-বিদেশের বহু মানুষই জানতেন। ইলিয়াসের অতিথিবৎসলতার কথাও তাঁরা জানতেন। কিন্তু বৃদ্ধ ইলিয়াস তাঁর তিলতিল পরিশ্রমে গড়ে তোলা বিষয় সম্পত্তি হারিয়েও যে সুখী একথা তারা জানতেন না।

   ইলিয়াস ও তার স্ত্রী অতিথিদের জানিয়েছিল, প্রভূত ঐশ্বর্যের অধিকারী হলেও তাদের জীবনে সুখ ছিল না, শান্তি ছিল না। তখন অতিথি এলে তাদের আপ্যায়ন কীভাবে হবে। মজুরেরা কম খেটে বেশি টাক নিল কিনা, এমনই সব চিন্তায় মগ্ন থাকত তারা। অন্যান্য দুশ্চিন্তাও ছিল তাদের।

   ঘোড়ার বাচ্চা, গোরুর বাছুর নেকড়ে নিয়ে গেল কিনা, ভেড়ার ছানা তাদের শরীরের চাপে মরে গেল কিনা, এমন দুশ্চিন্তাও ছিল। নিজেদের মধ্যে নানা মতবিরোধ। ছিল। কাজেই সুখী জীবনের অর্থ কী তারা বুঝতেই পারেনি কখনও।

  এখন মহম্মদ শার বাড়িতে মজুরের কাজ করে, সর্বহারা ইলিয়াস ও তার স্ত্রী প্রকৃত সুখের সন্ধান পেয়েছে। এখন আর তাদের কোনো পিছুটান নেই, অশান্তি নেই, দুশ্চিন্তা নেই। তাদের একমাত্র কাজ প্রভুর সেবা করা। বাড়িতে অতিথি এলেই তারা খাবার ও কুমিস পায়। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করার সময়ও তাদের এখন আছে। 

   সম্পত্তি হারিয়ে মানুষ অবুঝ হয়ে কাঁদে। কিন্তু ঈশ্বর প্রকৃত সত্যটি তাদের কাছে উন্মোচন করে দিয়েছেন। সুখ সম্পদে নেই, সুখ আছে ঈশ্বর চিন্তায়। মোল্লা সাম সেমাগির এই কথাটিকেই জ্ঞানের কথা বলেছেন।

"নাম উয়ি। নামটা আপনারা হয়তো শুনে থাকবেন।-- ইলিয়াস কে। তার সম্পর্কে যা জান লেখো।


   উত্তরে ইলিয়াস উফা প্রদেশে বসবাস করত। বিয়ের একবছর পর যখন ইলিয়াসের বাবা মারা যায় তখন সে খুব ধনী বা খুব গরিব—কোনোটাই ছিল না। মোটামুটিভাবে জীবনধারণের জন্য তার সামান্য কিছু গোরু, ভেড়া, ঘোটকী ছিল। গোল ছিল দুটি, ভেড়া কুড়িটা আর ঘোটকী ছিল সাতটা। ইলিয়াস খুব পরিশ্রমী ছিল। অলসভাবে সময় নষ্ট করত না সে। সামান কয়েকটি গোরু-ভেড়া-ঘোটকী ও সুব্যবস্থায় রক্ষণাবেক্ষণ করত সে।

  সকলের আগে ঘুম থেকে উঠত তারা, ঘুমোতে যেত সকলের পরে। দিবারাত্র পরিশ্রম করায় প্রতি বছরই তাদের অবস্থার উন্নতি হতে লাগল। জীবনের পঁয়ত্রিশটা বছর কঠোর পরিশ্রম করে প্রচুর সম্পত্তির অধিকারী হয়েছিল ইলিয়াস। তখন তার দুশো ঘোড়া, দেড়শো গোরু-মোষ আর বারোশো ভেড়া ভাড়াটে মজুরেরা তার পশুদের দেখাশোনা করে—দুধ দোয়, কুমিস, মাখন, পনির সব তৈরি করে। ইলিয়াসের অবস্থার এমন উন্নতিতে প্রতিবেশীরা খুব ঈর্ষান্বিত হয়ে উঠল।

  ইলিয়াসের তিন সন্তান—দুই ছেলে এক মেয়ে। ইলিয়াসের সম্পত্তি যখনই বেড়ে উঠল তার ছেলেরা খুব আরামপ্রিয় বিলাসী হয়ে পড়ল। বড়ো ছেলেটি মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে মারা গেল। ছোটো ছেলেটি এমন একটি মেয়েকে বিয়ে করে আনল যে বাপের আদেশ অমান্য করত। ফলে ইলিয়াস তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেয়।

  এ ঘটনার পরপরই ইলিয়াসে অবস্থা খারাপ হতে থাকে। দুর্ভিক্ষ, মড়ক লেগে গোরু, ভেড়া মরে যায়। ভালো ঘোড়াগুলি চুরি হয়ে যায়। সর্বস্ব হারিে ইলিয়াস প্রতিবেশী মহম্মদ শায়ের বাড়িতে ভাড়াটে মজুরের কাজ করে জীবনধারণ করতে থাকে। কিন্তু এত দুরবস্থার মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করেও ইলিয়াস ও তার স্ত্রী সুখের সন্ধান পায়। এমন বিষয়সম্পত্তিহীন হয়েও তারা প্রকৃত অর্থেই সুখ ঈশ্বর চিন্তা করবারও যথেষ্ট সময় পেয়েছে তারা।

  ইলিয়াসের জীবনের এই ঘটনাধারা থেকে আমরা তার চরিত্রের অনেকগুলি দিক জানতে পারি। প্রথমত, ইলিয়াস অত্য রিশ্রমী ও কর্মপ্রিয় মানুষ। নিজের অবস্থার উন্নতির জন্য দিনরাত এক করে পরিশ্রম করেছে সে। ইলিয়াসের ব্যক্তিত্বে কর্ষণীয় একটি দিক হল ছেলেমেয়েদের নিয়ন্ত্রিত করার দক্ষতা।

  যখনই সে দেখেছে ছোটো ছেলের বউয়ের আচরণ যথা . বুঝেছে সংসারের অশান্তি প্রবল হয়ে উঠবে। তখনই সে ছেলেকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করবার সিদ্ধান্ত নিয়েে =ব সম্পত্তির অধিকার থেকে বর্ণিত করেনি তাকে। এখানেও ইলিয়াসকে একজন কর্তব্যপরায়ণ পিতার ভূমিকায় দেখা যায়।

   সংসারজীবনে এই ভূমিকার পর অধ্যাত্মজীবনেরও সারা ইলিয়াসকে মনে করতে দেখা যায়। পরিমিতি সর্বহারা হয়েও ইলিয়াসকে আমরা ভেঙে পড়তে দেখি না। সে বুঝতে পেরেছে প্রকৃত সুখ বিষয়সম্পতি থেকে পাওয়া যায় না। পাওয়া যায় মানুষের সেবায়। মহম্মদ শায়ের আলয়ে থেকে, তার দেনা করে চিন্তা ে সম্মান পেয়েছে। পেয়েছে পিছুটানহীন এক নিশ্চিন্ত জীবন। এইসব কারণেই ইলিয়াসের আ সম্পর্কে উৎসাহিত করে তোলে।


ইলিয়াসের সম্পতি টান পড়েছিল কেন। সম্পতিতে টান পড়ে ইলিয়াসের কী পরিণতি হয় সংক্ষেপে লেখো।

   পঁয়ত্রিশ বছর কঠোর পরিশ্রম করে ইলিয়াস প্রচুর সম্পতির অধিকারী হয়েছিল। তার দুশো ঘোড়া, দেড়শো  গোরু-মোষ, বারোশো ভেড়া ছিল। ভাড়াটে মজুরেরা সেইসব পশুদের দেখাশোনা করে। ইলিয়াসের তখন যেমন প্রভাব তখন, প্রতিপত্তিও তেমন। প্রতিবেশীরা তার সাফল্যে তার প্রতি ঈর্ষান্বিত। 

  বহু দূর থেকে অতিথি আসলেও তাদের আপ্যায়নের কোনো ত্রুটি করে না ইলিয়াস। এমন একটি পরিস্থিতিতে ইলিয়াসের বড়ো ছেলেটি মারা যায় বিবাদে আর ছোটো ছেলেটি কাজকর্ম না করে ঝগড়াটে বউ নিয়ে প্রবল অশান্তি করতে থাকে। তারা বাবার আদেশ মানত না। একটি সময়ে ইলিয়াস তার এই আচরণে তাকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করল। তবে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত না করে তাকে একটা বাড়ি দিল, কিছু গোরু-ঘোড়াও দিল। ছেলেকে সম্পত্তির ভাগ করে দেওয়ার কারণেই ইলিয়াসের সম্পত্তিতে টান পড়েছিল।

    ছোটো ছেলেকে সম্পত্তি ভাগ করে দেওয়ার পর থেকেই ইলিয়াসের জীবনে বিপর্যয় শুরু হয়। ভেড়ার পালে মড়ক লেগে যায়। দুর্ভিক্ষে খড় পাওয়া যায় না। ফলে শীতকালে অনেক গোরু-মোষ না খেয়ে মরে গেল। এরপর ইলিয়াসের খুব ভালো ঘোড়াগুলিকে কিরবিজরা চুরি করে। এইভাবে ক্রমশই নানাভাবে ইলিয়াসের অবস্থার অবনতি ঘটতে শুরু করে। অবস্থার অবনতির সঙ্গে সঙ্গে ইলিয়াসের শরীরের জোরও কমতে থাকে। এইভাবে সত্তর বছর বয়সে ইলিয়াস তার পশমের কোট, ঘোড়ার জিন, কম্বল, তাঁবু এবং সবশেষে গৃহপালিত পশুগুলিকেও বিক্রি করে দেয় বাধ্য হয়ে। 

   ইলিয়াসের বিতাড়িত পুত্র তখন দেশান্তরী হয়ে গেছে, মেয়েটিও মারা গেছে, বৃদ্ধ দম্পতিকে তখন সাহায্য করবারও কেউ নেই। একসময় ইলিয়াস ও তার স্ত্রী লোকের বাড়িতে ভাড়াটে মজুরের কাজ করে জীবনধারণ করতে থাকে। ক্রমে মহম্মদ শা ইলিয়াসের দুরবস্থা দেখে আর তার পূর্বের অবস্থা ভেবে করুণা হয়।

  সে তাদের দুজনকে নিজের বাড়ি স্বাধীনভাবে বসবাস করতে বলে। ইলিয়াস ও তার স্ত্রী তারপর থেকে মহম্মদ শাকে নিজের প্রভু মনে করে তার কাজে, মনিবের সেবাতেই নিজেদের যাবতীয় সামর্থ্যকে নিয়োজিত করে এবং জীবনের প্রকৃত সুখের সন্ধান পায়।


ইলিয়াসের অতিথিবৎসলতার কথা স্মরণ করে তার খুব দুঃখ হল- কার কথা বলা হয়েছে ? ইলিয়াসের অতিথি বৎসলতার কী পরিচয় পাওয়া যায়।

   ইলিয়াসের প্রতিবেশী মহম্মদ শার কথা বলা হয়েছে আলোচ্য উক্তিটিতে।

    জীবনের শুরুতে ইলিয়াসের অবস্থা খুব ভালো ছিল না। খুব সামান্যই সম্বল নিয়ে ইলিয়াস শুরু করেছিল তার জীবনের চলা। সকাল থেকে রাত্রি পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করে চলত সে ও তার স্ত্রী। সামান্য কিছু সম্পত্তিকে সুন্দরভাবে যত্ন করে ইলিয়াস ধীরে ধীরে তার অবস্থার পরিবর্তন ঘটায়। এই ভাবে টানা পঁয়ত্রিশ বছর ইলিয়াস এবং তার স্ত্রী কঠোর পরিশ্রম করে।

   কঠোর পরিশ্রমের সাফল্য হিসাবে সে প্রায় দুশো ঘোড়া, দেড়শো গোরু-মোষ, আর বারোশো ভেড়া তার সম্পত্তি বানিয়ে ফেলে। সম্পত্তি অর্জন করার পর ইলিয়াসের নাম চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। বহু দূর-দূরান্ত থেকে ভালো ভালো লোক তার কাছে আসতে থাকে। সেইসব অতিথিদের সঙ্গে অত্যন্ত ভালো ব্যবহার করতে থাকে ইলিয়াস। 

  সকলকেই সে স্বাগত জানায়। উপযুক্ত ভোজ পানীয় দিয়ে তাদের আপ্যায়ন করে। অতিথি যে সময়েই আসুক না কেন কুমিস, চা, শরবত, মাংস সব সময়ই তাদের আতিথ্যের জন্য মজুত রাখত ইলিয়াস। অতিথি এলেই ভেড়ার পাল থেকে একটা বা দুটো ভেড়া মারা হয়। অতিথি অনেকে এলে ঘোড়া মারা হয়। 

  তাদের মাংস অতিথিদের জন্য পরিবেশন করত ইলিয়াস। এতটাই অতিথিবৎসল ছিল ইলিয়াস। ফলে যে মানুষ অতিথি হয়ে কখনো ইলিয়াসের বাড়িতে আসেনি তারাও মানুষের মুখে মুখে শোনা গল্পে ইলিয়াসের নাম জানত, এখানে এই কথাটাই বলা হয়েছে।



ইলিয়াস (গল্প) বিকল্পভিত্তিক প্রশ্ন — Ilyas MCQ Question Answer – ইলিয়াস (গল্প) প্রশ্ন উত্তর – Ilyas Question Answer — নবম শ্রেণী বাংলা সাজেশন – WBBSE Class 9 Bengali Suggestion

 ইলিয়াস (গল্প) বিকল্পভিত্তিক প্রশ্ন — Ilyas MCQ Question Answer – ইলিয়াস (গল্প) প্রশ্ন উত্তর – Ilyas Question Answer — নবম শ্রেণী বাংলা সাজেশন – WBBSE Class 9 Bengali Suggestion

 ইলিয়াস (গল্প) সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন — Ilyas short Question Answer – ইলিয়াস (গল্প) প্রশ্ন উত্তর – Ilyas Question Answer — নবম শ্রেণী বাংলা সাজেশন – WBBSE Class 9 Bengali Suggestion ইলিয়াস (গল্প) সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন — Ilyas short Question Answer – ইলিয়াস (গল্প) প্রশ্ন উত্তর – Ilyas Question Answer — নবম শ্রেণী বাংলা সাজেশন – WBBSE Class 9 Bengali Suggestion ইলিয়াস (গল্প) সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাভিত্তিক প্রশ্ন — Ilyas Question Answer –


ইলিয়াস (গল্প) প্রশ্ন উত্তর – Ilyas Question Answer — নবম শ্রেণী বাংলা সাজেশন – WBBSE Class 9 Bengali Suggestion ইলিয়াস (গল্প) সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাভিত্তিক প্রশ্ন — Ilyas Question Answer – ইলিয়াস (গল্প) প্রশ্ন উত্তর – Ilyas Question Answer


 — নবম শ্রেণী বাংলা সাজেশন – WBBSE Class 9 Bengali Suggestion ইলিয়াস (গল্প) রচনাধর্মী প্রশ্ন — Ilyas Question Answer – ইলিয়াস (গল্প) প্রশ্ন উত্তর – Ilyas Question Answer — নবম শ্রেণী বাংলা সাজেশন –


 WBBSE Class 9 Bengali Suggestion ইলিয়াস (গল্প) রচনাধর্মী প্রশ্ন — Ilyas Question Answer – ইলিয়াস (গল্প) প্রশ্ন উত্তর – Ilyas Question Answer — নবম শ্রেণী বাংলা সাজেশন – WBBSE Class 9 Bengali Suggestion