বিশ্ব বিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের গঠন ও সুপারিশ সম্পর্কে আলোচনা । University Education Commission.


       উচ্চশিক্ষা বা বিশ্ব বিদ্যালয় স্তরের উন্নতির জন্য 1948 সালের 2 রা নভেম্বর তৎকালীন ভারত সরকার এক কমিশন গঠন করেন, এই কমিশনের কে বিশ্ব বিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন বা University Education Commission  বলা হয়।



       এই শিক্ষা কমিশন টি স্বাধীন ভারতের প্রথম শিক্ষা কমিশন। শিক্ষাবিদ ডক্টর সর্বপল্লি রাধা কৃষ্ণানের সভাপতিত্বে এই শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়। এছাড়াও যে সমস্ত বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ এই কমিশনের সাথে যুক্ত ছিলেন তারা হলেন - নির্মল কুমার সিদ্ধান্ত, তারা চাঁদ, জাকির হোসেন, মুদালিওর, মেঘনাদ সাহা, করম বহাল,জোসেফ ডাফ প্রমুখ। 1949 সালে এই কমিশন 747 পৃষ্ঠার শিক্ষা সম্পর্কিত এক রিপোর্ট ভারত সরকারের কাছে পেশ করেন, যেখানে উচ্চ শিক্ষার কাঠামো, কার্য ধারা, শিক্ষায় ধর্ম নিরপেক্ষতা ইত্যাদি বিষয় গুলি তুলে ধরা হয়।


                                    সুপারিশ

1. উদ্দেশ্য
         বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষার লক্ষ্য এমন হবে যাতে শিক্ষার্থীরা রাজনীতি, প্রশাসন, কোগু নেতৃত্বে সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করব। শিক্ষার্থীরা যাতে দেশীয় সংস্কৃতির ভাব কে বুঝতে পারে তার ব্যাবস্থা করতে হবে। শিক্ষার লক্ষ্য এমন হবে যাতে মানব জীবনে মূল্যের জাগরণ ঘটে। রাধা কৃষ্ণান কমিশন  উচ্চ শিক্ষার জন্য চারটি গণতান্ত্রিক অধিকারের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন - সামাজিক ন্যায় বিচার, স্বাধীনতা, সম- অধিকার, ও সৌভ্রাতিত্ব।

2. পাঠক্রম
          প্রথমত ডিগ্রী স্তরে থাকবে সর্ব ভারতীয় রাষ্ট্রভাষা, ইংরেজি এবং মাতৃভাষা। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে কৃষি বিদ্যার উপর গুরুত্ব দিতে হবে। পাঠক্রম কে কর্ম কেন্দ্রিক করতে হবে। সাধারণ ধর্মী ও বিশেষ ধর্মী শিক্ষার মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ করতে হবে।

3. শিক্ষার মাধ্যম
         বিশ্ব বিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন মাধ্যমিক স্তর থেকে বিশ্ব বিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত ত্রিভাষা নীতির কথা বলেছেন - 
              A. মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা
              B. ফেডারেল লঙ্গুয়েজ বা হিন্দি ভাষা
              C. ইংরেজি ভাষা।


4, পরীক্ষা ব্যাবস্থা
           পরীক্ষার প্রশ্নপত্র রচনা ধর্মী না করে বস্তুধর্মী করায় শ্রেয়। বিভিন্ন বিশ্ব বিদ্যালয়ের পরীক্ষার নম্বর দেবার ক্ষেত্রে সমতা বিধান উচিত। গ্রেস নম্বর দেবার পদ্ধতি তুলে দিতে হবে। মৌখিক পরীক্ষার ব্যাবস্থা রাখতে হবে। সমস্ত বছরের কাজের ভিত্তিতে 1/3 নম্বর দিতে হবে।

5. শিক্ষক
        বিশ্ব বিদ্যালয় স্তরের শিক্ষক কে চারটি স্তরে ভাগ করা jay- প্রফেসর, রিডার, লেকচারার, ইন্সট্রাক্টর। কমিশন শিক্ষক সম্পর্কে বলেন শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে, এমন কি কয়েকজন গবেষকও থাকবেন। শিক্ষকদের পদোন্নতি হবে যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে।

6. নারীশিক্ষা
           নারী শিক্ষা সম্পর্কে কমিশন সুপারিশ করেন - সমাজের বুকে নারীরা যাতে আত্মপ্রকাশ করতে পারে তার ব্যাবস্থা করতে হবে। উন্নত মানসিকতা গড়ে তোলার মতো ব্যাবস্থাও করতে হবে। পরিবার পরিচালনা, গার্হস্থ্য নীতি পড়ার পরামর্শ দিতে হবে।